ছায়ানটের সুরে-ছন্দে শরতের স্নিগ্ধতা

ঋতুপ্রকৃতির সৌন্দর্য তুলে ধরে মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে জাগাতে অনুষ্ঠান সাজানো হয় নানা আয়োজনে

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শরতের আয়োজনে নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। ছবিটি ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন থেকে তোলা -সংগৃহীত
বৃষ্টিভেজা দিনের শুরুটা হয়েছে শরতের গানের সুরে সুরে। দেশের গৌরবময় সংগীত শিক্ষা তথা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট তাদের ঋতুভিত্তিক নিয়মিত আয়োজনের ধারাবাহিকতায় শনিবার আয়োজন করেছিল 'শরতের স্নিগ্ধতা মুছে দিক মলিনতা' নামে অনুষ্ঠান। ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয় নির্ধারিত সময় সকাল ৭টায়। শুরুতেই ছিল কোরাস গান ও নাচে 'ওগো শেফালি বনে মনের কামনা' দিয়ে। ছায়ানটের শ্রোতা-দর্শকরা জানান, তাদের অনুষ্ঠানগুলোয় বিশেষত কোনো বক্তব্য থাকে না। একের পর এক অবিরত পরিবেশনা চলতে থাকে স্রোতোধারার মতো। অনুষ্ঠান সাজানো হয় কোরাস গানের সঙ্গে নাচ, একক কণ্ঠের গান, আবৃত্তি ও পাঠ দিয়ে। সব পরিবেশনাই কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। পরিবেশনে অংশগ্রহণকারীরা সবাই এসেছিলেন শরতের শ্বেতশুভ্র মেঘ, কাশফুল আর আকাশের নীলের মিলমিশের পোশাকে সেজে। প্রথম একক গানটি ছিল 'আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে/নীল আকাশের ঘুম ছুটালে', সেমন্তী মঞ্জরীর গাওয়া। পরে দীপ্র নিশান্ত গেয়েছেন 'কার বাঁশি নিশিভোরে বাজিল মোর প্রাণে'। বাঁশির সেই সুরে জেগেছিল কবির হৃদয়ে। আলোয় উদ্ভাসিত অনিন্দসুন্দর ধরণী আর শরতের শিশির বিন্দুকে তার মনে হয়েছিল ধরণীর চোখ ভেসে যাওয়া অশ্রম্নমালা। 'ছেলেবেলার শরৎকাল' লেখা থেকে পাঠ করে শুনিয়েছেন ডালিয়া আহমেদ। এভাবেই গানের সুরে, নাচের ছন্দে, পাঠপরিক্রমায় এগিয়েছে অনুষ্ঠান। ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ জানান, 'ঋতুপ্রকৃতির সৌন্দর্য তুলে ধরে মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে জাগানোর জন্য ছায়ানট এই আয়োজনগুলো করে থাকে। রবীন্দ্রসরোবরের খোলা মঞ্চে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের ভাবনা ছিল, তবে বৃষ্টিবাদলের প্রাবল্যে সেই ভাবনা থেকে সরতে হয়েছে।' ছায়ানটের এসব অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আমন্ত্রিত খ্যাতনামা শিল্পীরা অংশ নিয়ে থাকেন। শরতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন অর্ধশতাধিক শিল্পী ও শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একক পরিবেশনায় ছিলেন লাইসা আহামদ লিসা, প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য, ফারজানা আক্তার, অমেয়া প্রতীতি, অর্ণব বড়ুয়া, সুতপা সাহা, চঞ্চল কৃষ্ণ বড়াল ও পার্থ প্রতীম রায়। গানগুলোর মধ্যে ছিল 'বাজিল কাহার বীণা', 'শরত আলোর কমল বনে', 'এবার অবগুণ্ঠন খোলো', 'আমার নয়ন ভুলানো এলো', 'আমারে ডাক দিল কে', 'কেন যামিনী না যেতে', 'এই তো তোমার প্রেম', 'আমার রাত পোহালো'। 'শরৎ' কবিতাটি আবৃতি করেছেন বাচিক শিল্পী রফিকুল ইসলাম। 'আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়' কোরাস গানের সঙ্গে নাচের পরে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শেষ হয় প্রায় দেড় ঘণ্টার পরিবেশনা।