সমাজে পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত দলিত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার আদায়ে ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে এ সম্প্রদায়ের মানুষ। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আওয়াজ ফাউন্ডেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো- ১. বৈষম্যবিরোধী বিল ২০২২ সংশোধন করে অবিলম্বে বিল পাস করতে হবে।
২. পুনর্বাসন ছাড়া দলিত কলোনি বা পলস্নী উচ্ছেদ করা চলবে না।
৩. জনপরিসরে দলিতদের প্রবেশাধিকারে বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. সারাদেশে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং অন্য সব পরিচ্ছন্নকর্মীর চাকরি স্থায়ীকরণসহ সুনির্দিষ্ট পে-স্কেল ও কর্ম নিরাপত্তা দিতে হবে। ৫. সব পরিচ্ছন্নকর্মীর ১৮ হাজার টাকা বেতন ও লোডারদের ২২ হাজার টাকা দিতে হবে। ৬. সরকার কর্তৃক খাস জমিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের স্থায়ীভাবে বসবাস করতে দিতে হবে। ১-২০০ বছরের দলিতদের বসবাসের জায়গা তাদের নামে দলিল করে দিতে হবে।
৭. সরকারি, আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেশাদার পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং বন্ধ করে স্থায়ীভাবে চাকরিতে হরিজন সম্প্রদায়কে ৮০ শতাংশ কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮. পিছিয়ে পড়া দলিত সম্প্রদায়ের শিক্ষাক্ষেত্রে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তির কোটা নিশ্চিত এবং উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের সব পেশায় সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটা কলোনিতে অক্ষরজ্ঞান শিক্ষার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা ও বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৯. পিছিয়েপড়া দলিত সম্প্রদায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে চাকরি ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগীর চিকিৎসা ব্যয়ভার সরকারকে নিতে হবে।
১১. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় দলিতদের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ১২. দলিতদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ১৩. পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ১৪. কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্রবৈষম্য প্রদর্শন করবে না। সংবিধানের এ ধারা বাস্তবায়ন করতে হবে, আহত, নিহত ও নারীর প্রতি সহিংসতা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর করতে হবে।
১৫. স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন কমিটিতে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলিত সম্প্রদায়ের সাথী। এ ছাড়া আরও ছিলেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, কোষাধ্যক্ষ খাদিজা আক্তার, তাসলিমা আফরোজা, ইসমেত জেরিন, মিরাজ, সহ-দলিত সম্প্রদায়ের হরিজন কল্যাণ সমিতির রাঙামাটি হরিজন কলোনির সভাপতি রাজা লাল, সুপ্রিয়া, সোনামনি, শিবু দাস, জোসনা রানী, হাসিনা রানী, সাথী, সুধির লাল, শিবানী রানী, মুক্তা রানী, জ্যোতি রানী, বাবুল, রঞ্জন, তারা রানী, সংগীতা লাল বেগী ও চাঁদনী রানী দাস।