সংস্কার শেষ করে দ্রম্নত সুষ্ঠু নির্বাচন দিন : রিজভী
প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত অপরিহার্য কিন্তু সংস্কারেরও প্রয়োজন আছে- এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, 'নির্বাচনের আগে গণতন্ত্রের যে উপাদানগুলো আছে, এগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে। তা হলো- নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের যেসব সুপারিশ থাকে সেগুলো নতুন সরকার এলে বিবেচনা করা। তাই আমরা বলছি, যত দ্রম্নত সম্ভব সংস্কারগুলো শেষ করে আপনি (অন্তর্র্বর্তী সরকার) অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।'
বৃহস্পতিবার মিরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানে শহীদ বিইউবিটি'র ছাত্র তাহমিদ ও মাসুদ রানার পরিবারের সঙ্গে 'আমরা বিএনপি পরিবার' এর প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎকালে গণমাধ্যমে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম একটা মাপকাঠি। এই নির্বাচন থেকে বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫-১৬ বছর যাবত বঞ্চিত ছিল। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি উপাদান। যদিও কোনো কিছু দিয়ে এটাকে মাপকাঠি করা যায় না। এটা একটা জাতির সাইকোলজিক্যাল বিষয়, যে আমি বন্দি কি বন্দি না। কারাগারের বাইরে থাকলেও যখন
ফ্যাসিবাদ থাকে তখন নিজেকে বন্দি মনে হয়। সেজন্য এটা (গণতন্ত্র) গুনে গুনে ক্যালকুলেশন করে করা সম্ভব নয়।'
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্রকে পূর্ণাঙ্গ করার জন্য যে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন, আইনের শাসন এবং সংবাদপত্রের ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা আমাদেরকে দেখতে হবে। আর অন্তর্র্বর্তী সরকার সংস্কারের মাধ্যমে কীভাবে তাদের কাজগুলো করছে, সেটা জনগণ দেখবে।'
সরকারের সর্বত্র শেখ হাসিনার 'ভূত'
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ বক্তব্য রাখেন।
'আমার দেশ' পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার এবং আমার দেশ পত্রিকা খুলে দেওয়ার দাবিতে সাংবাদিকদের সংগঠন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, 'পুলিশের সামনে মার্ডার, পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে। অন্তর্র্বর্তী সরকারের ওপর এর দায়িত্ব বর্তায়।'
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে করা মামলার আসামি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'সে নাকি এখনো কারাগারে, তাহলে প্রশাসন কীভাবে চলছে? শুধু একটা পোস্ট দেওয়ার কারণে একজন ছাত্রী এখনো যদি কারাগারে থাকে তাহলে তো বুঝতে হবে আমরা যেটা বলি, শেখ হাসিনার 'ভূতরা' আজকে আদালতে আছে, প্রশাসনে আছে, পুলিশে আছে। তারা প্রতি পদে পদে এই সরকারকে ব্যাহত করছে।'
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএফইউজের সহসভাপতি বাছির জামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল আউয়াল ঠাকুর, একেএম মহসিন, রাশেদুল হক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মুরসালীন নোমানীসহ দুই ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ষড়যন্ত্র হচ্ছে, রুখে দিতে হবে :ফারুক
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, 'সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা হলো, আওয়ামী লীগ যেন আবার ক্ষমতায় এসে মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে না পারে। আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। সেটা না হলে ক্ষতি হবে জনগণের।'
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাগ্রত বাংলাদেশ আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। 'জনপ্রশাসনে শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত বিতর্কিত আমলাদের অপসারণের' দাবিতে ওই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, 'বাংলাদেশের আন্দোলনরত সব দলের সঙ্গে আপনি কথা বলা শুরু করেছেন, অভিনন্দন আপনাকে। নিউইয়র্কের মাটিতে বাংলাদেশের কথা তুলে ধরেছেন, আবু সাঈদের কথা তুলে ধরেছেন, ছাত্রদের আন্দোলনের কথা তুলে ধরেছেন- এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।'
তিনি বলেন, 'আপনার কাছে প্রত্যাশা, শেখ হাসিনাকে দেশে আনতে হবে। শেখ হাসিনা অবিচার করেছে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যারা তারেক রহমানকে বিনা কারণে সাজা দিয়েছে, খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে তারা এখনো বহাল তবিয়তে হাইকোর্টে আছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলব, এসব ঘাপটি মারা লোকদের বের করে দেন। না হলে আপনারা শান্তিতে আরেকটি নির্বাচন দিতে পারবেন না। তারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে, এটা জনগণের ভাষ্য।'