কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যাকান্ডে আরও দুইজনকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত আরেকটি বন্দুক।
শুক্রবার ভোরে চকরিয়া উপজেলার কাহারিয়াঘোনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও শনিবার সকাল ১০টায় তা জানিয়েছেনর্ যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম চৌধুরী।
এর আগে ডুলাহাজরা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় রাস্তার পাশ থেকে ডাকাত দলের ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় জানিয়েছেন তিনি।
গ্রেপ্তাররা হলো, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা
ইউনিয়নের ডুমখালী রিজার্ভপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩৮) এবং একই ইউনিয়নের মাইজপাড়ার মৃত নুরুল আলমের ছেলে এনামুল হক (৫০)।
আবুল কালাম বলেন, শুক্রবার ভোরে চকরিয়া উপজেলার কাহারিয়াঘোনা এলাকায় সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় জড়িত কয়েকজন আসামি অবস্থান করছে খবরে যৌথ বাহিনীর দল অভিযান চালায়।
এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুইজন সন্দেহজনক লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে তাদের দেহ তলস্নাশি করে দেশীয় তৈরি দুইটি বন্দুক ও তিনটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
র্
যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, 'গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার তথ্য স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে নাছির উদ্দিন সেনা কর্মকর্তা তানজিমকে গলায় ছুরিকাঘাত করে মৃতু্য নিশ্চিত করেন। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন এনামুল হক।'
তাদের চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
এছাড়া তিনি বলেন, শনিবার রাতে পূর্বমাইজপাড়ায় রাস্তার পাশে ঘাসের মধ্যে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পড়ে থাকার খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ,র্ যাব ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি বন্দুকটি উদ্ধার করেছে।
ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডের সময় উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি তাদের সঙ্গে ছিল বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার।
র্
যাব জানিয়েছে, লেফটেন্যান্ট নির্জন হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে যৌথ অভিযান অব্যাহত আছে। এ পর্যন্ত প্রধান আসামি মো. বাবুল ওরফে বাবুল ডাকাতসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার রাত ৩টার দিকে ডুলাহাজরা ইউনিয়নের পূর্বমাইজপাড়া এলাকায় অভিযানের সময় ডাকাতের ছুরিতে মারা যান লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন।
আইএসপিআর জানিয়েছিল, রাতে পূর্বমাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর আসে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে চকরিয়া আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে পৌঁছান।
অভিযানের সময় সাত-আট সদস্যের ডাকাত দলটির কয়েকজনকে তাড়া করেন লেফটেন্যান্ট নির্জন। এ সময় ডাকাতরা নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযানের সময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা রেজাউল করিমের বাড়ি ও আশপাশ থেকে ছয়জন ডাকাতকে আটক করে। এ ছাড়া দুটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের ১১ রাউন্ড গুলি, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি, একটি পিকআপ এবং একটি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণকারী নির্জন পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি মিলিটারি একাডেমি থেকে ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে কমিশন লাভ করেন।