গাজীপুরে মির্জা ফখরুল
অবিলম্বে তারেক রহমানকে দেশে ফিনিয়ে আনতে হবে
প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইতোমধ্যে তালবাহানা শুরু হয়েছে বলে উলেস্নখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তাকে দেশে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
শুক্রবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হান্নান শাহর স্মরণসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো দেশের সংকট কাটেনি। আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে পরাজিত শক্তিরা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। তাই বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে দাঁড়াতে হবে।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমানের পাশাপাশি দেশের সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেওয়া মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ এ মামলাগুলো প্রত্যাহার করা না হলে লেভেল পেস্নয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না।
আওয়ামী লীগের লোকজন দেশের গার্মেন্টস কারখানায় অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে এ শিল্পকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'গার্মেন্টস কর্মীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে।'
তিনি বলেন, 'নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও তার সরকারের লোকজন সবাই ভালো মানুষ। এ সরকার সংস্কার চায় এবং আমরাও সংস্কারে বিশ্বাসী। তাই বলে সংস্কারের নামে বেশি সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশকে ফিরিয়ে দিতে দেরি হলে অন্য কোনো ব্যবস্থা যেন ঢুকে না পড়ে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।'
দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বর্তমানে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ পেতাম না। আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখতে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা ভেবেছিল তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবে এবং দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে।'
তিনি আরও বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে দেশে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধন করে এ ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের ব্যবস্থা করেছিল। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু ছাত্র জনতার সুনামির তান্ডবে লুটপাট ও চুরির দায় নিয়ে তারা আজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।'
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ.স.ম হান্নান শাহ একজন সত্যিকারের নির্ভীক সাহসী সৈনিক ছিলেন উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বীরের বেশে আজীবন লড়াই করেছেন তিনি। একটি কুচক্রী মহল যখন শহীদ জিয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করার ষড়যন্ত্র করছিল তখন তিনি সাহসের সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন।'
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও হান্নান শাহ'র ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য ও জেলা নায়েবে আমির মো. শেফাউল হক, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, মজিবুর রহমান, গাজীপুর মহানগর বিএনপি সভাপতি শওকত হোসেন সরকার প্রমুখ।
স্মরণসভার আগে প্রয়াত হান্নান শাহ্র রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়। এর আগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপজেলার ঘাগটিয়ার গ্রামের পারিবারিক করবস্থানে হান্নান শাহ'র কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।