জনগণ নয়, হাসিনার সঙ্গে বন্ধুত্ব চায় ভারত :রিজভী
প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, শেখ হাসিনার মতো একজন স্বৈরশাসকের সঙ্গে ভারত বন্ধুত্ব চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী মন্ত্রী যখন দৃষ্টতাপূর্ণ কথাবার্তা বলবেন, তখন বাংলাদেশের মানুষের তো আবেগ থাকতেই পারে। তারা যখন হেয় করবে, অবহেলা করবে, ঘৃণা করবে- তখন তো আমাদের মধ্যে আবেগ আসবেই। বাংলাদেশের জনগণকে তারা পছন্দ করে না, জনগণের সঙ্গে তারা বন্ধুত্ব চায় না। তাদের পছন্দ শেখ হাসিনা। কারণ, শেখ হাসিনা থাকলে ভারত বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।
বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পলস্নী চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংগঠনটির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির বিগত আন্দোলনে গুম, খুন হওয়া ব্যক্তিদের আর্থিক অনুদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের একজন উপদেষ্টা বলেছেন 'ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয়। এখানে আবেগে কথা বললে হবে না।' বাঙালি জনগোষ্ঠী ভারতেও আছে, দুর্গাপূজার সময় ইলিশ তাদের কাছে একটি বড় উপাদান। সেটা আমরা জানি। আমরা কোনোদিনই ইলিশ রপ্তানিতে বাধা দেইনি। কিন্তু ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন, 'বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে' তখন তো আমাদের মধ্যে আবেগ তৈরি হবেই।
দলটির এই মুখপাত্র বলেন, আমাদের গোটা জাতিই তো নিজ দেশ নিজ রাষ্ট্রের ব্যাপারে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ। ভারতে ইলিশ রপ্তানি হতেই পারে। কিন্তু ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর আমি কেন বলব না- আমরা ইলিশ মাছ দেব না।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সবসময় হয়ে এসেছে। কিন্তু আবেগ তখনই আসে যখন আমাদের হেয় করে আমাদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়। আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করি, কিন্তু তাদের সংকট হলে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। রপ্তানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয়। তারা কিন্তু আমাদের এক ইঞ্চিও ছাড় দেয় না।
রিজভী বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করে তখন তো আমাদের মধ্যে আবেগ চরম আকার ধারণ করবেই। বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ছিল বলেই এখানে বারবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ছিল বলেই এক রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বেশি সময় লাগার কথা নয় বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির তথ্য-বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গবেষণা-বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম প্রমুখ।