তোফাজ্জলকে হত্যায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে :ডিএমপি
প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও যারা জড়িত আছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপি।
সোমবার বেলা ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে- শুরু থেকেই পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। মামলার পর আমাদের ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ৬ জন ছাত্রকে সোপর্দ করেছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ফাইন্ডিংস আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে বাকি যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত আছে।'
গত বুধবার ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে মানসিক ভারসাম্যহীন ৩২ বছর বয়সি তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, যারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর এ ঘটনায় আট ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাদের বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপকমিশনার তালেবুর বলেন, 'আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে, তদন্তে যদি আরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়- তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।'
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর আন্দোলনকারীদের ক্ষোভের আগুন গিয়ে পড়ে থানার ওপর। দেশের সিংহভাগ থাকায় আক্রমণ করে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর পুলিশ সদস্যদের কেউ কেউ কাজে ফেরেননি।
যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছে তাদের বিষয়ে জানতে পুলিশ কর্মকর্তা তালেবুর বলেন, 'যারা এখনও অনুপস্থিত, আপনারা জানেন আমাদের কিছু আইন ও বিধির মধ্যে চলতে হয়। চাকরিতে কিছু নিয়ম-কানুন আছে। সেই নিয়ম-কানুন বিধি অনুযায়ী যদি কেউ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে চাকরিবিধি মেনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।'
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এ মুখপাত্র বলেন, 'ঢাকার ২২টি থানা আংশিক বা পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, সবমিলিয়ে ২১৬টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ে সংস্কার করে আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার। আমরা সীমিত রিসোর্সের মাধ্যমে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।'
ডিএমপির লুণ্ঠিত অস্ত্রের বিষয়ে এখনও 'হিসাব-নিকাশ' চলছে জানিয়ে তালেবুর বলেন, 'যেহেতু অনেকগুলো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা এখনও পরিপূর্ণ তথ্য পাইনি। এটার কাজ চলছে, শেষ হলে আপনাদের পরিপূর্ণ তথ্য দিতে পারব।'
জোড়া খুন, যুবক গ্রেপ্তার
এদিকে, শুক্রবার মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি সংলগ্ন বেড়িবাঁধে নাসির বিশ্বাস (২৯) ও মুন্না (২২) নামে দুইজনকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় মিরাজ মোলস্না নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান জানান, নিহতের ভাই সুমন বিশ্বাস মোহাম্মদপুর থানায় রোববার একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্তকালে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় রোববারই মিরাজ মোলস্নাকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তার মিরাজ মোলস্না এলাকার এলেক্স ইমন গ্রম্নপের সদস্য। এই গ্রম্নপ মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মিরাজের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় আগের একটি মামলা রয়েছে।'
নাসির হত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন করতে ও অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।