আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও আইজিপি চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুনকে আরও মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে খিলগাঁও থানার হত্যা মামলায় আনিসুলকে এবং উত্তরা পশ্চিম ও খিলগাঁও থানার দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মামুনকে।
এ বিষয়ে পুলিশের আবেদনের ওপর শুনানি করে সোমবার তা মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী।
এদিন সকাল ৮টায় তাদের ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাজধানীর দুই থানার হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ।
বিচারক তা মঞ্জুর করলে আসামিদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন।
শুনানিতে আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন আসামিদের জামিন চাইলে তা নাকচ করে দেন বিচারক। জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করে রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
দুই আসামিকেই খিলগাঁওয়ের মোহাম্মদ জুবায়ের আহমাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, সরকার পতনের দিন গত ৫ আগস্টে খিলগাঁও চৌরাস্তায় পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে জুবায়ের গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আর উত্তরা পশ্চিম থানার সাদিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়।
ওই সময় উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে হামলা চালানো হয়। এতে সাদিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জুলাই মারা যান।
এর আগে আনিসুল হক ও চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুনকে কয়েক দফা রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
শ্যামল দত্ত কারাগারে
এদিকে, রাজধানীর ভাসানটেক থানা এলাকায় গুলি করে ফজলু নামে এক যুবককে হত্যার মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত এই আদেশ দেন।
সাত দিনের রিমান্ড শেষে শ্যামল দত্তকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ভাসানটেক থানার উপপরিদর্শক মো. সাহিদুল বিশ্বাস। এ সময় শ্যামল দত্তের পক্ষে আইনজীবী শ্যামল কান্তি সরকার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে শ্যামল দত্তকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট হাজার হাজার জনতা বিজয় উদযাপন করতে বের হয়। ওইদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভাসানটেক থানার মিরপুর-১৪ নম্বরে আওয়ামী নেতাকর্মীদের হামলা ও গুলিতে ফজলু নিহত হন। এ ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার ভাই।