শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

মিথ্যা মামলা ও বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দুষ্কৃতকারী ও ভূমিদসু্য এম এন এইচ বুলুর দায়েরকৃত হয়রানি মামলায় নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ চেষ্টার প্রতিবাদে রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন মোসাম্মৎ নুর জাহান বেগম -যাযাদি

দুষ্কৃতকারী ও ভূমিদসু্য এম এন এইচ বুলুর দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা এবং প্রাণনাশের হুমকির মাধ্যমে নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গুলশানের মরহুম আবু ফতেহ ভূঁইয়া স্ত্রী মোসাম্মৎ নুর জাহান বেগম।

রোববার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে মোসাম্মৎ নুর জাহান বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ছোট ছেলের স্ত্রী মাসরুরা সুলতানা আজাহারী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, বড় ছেলের স্ত্রী কাজী মাহমুদা আক্তার, মেজো ছেলের স্ত্রী পারুল আক্তার ও মেয়ে খাদিজা আক্তার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, '১৯৬২ সাল হতে গুলশান-১ এর পস্নট নং-এসডবিস্নউ (এ)৩০, বাড়ি-০৩, রোড নং-১১, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ বাড়িটিতে আমার স্বামী সন্তান নিয়ে মালিকানা সূত্রে বসবাস করে আসছি। এ সম্পত্তিতে তৎকালীন ডিআইটির চেয়ারম্যানের ছেলের কুনজর পড়ে এবং একপর্যায়ে বাড়িটি দখল করতে আসে। ফলে ১৯৮০ সালে আমরা ৬৫৩/১৯৮০ নং মামলা দায়ের করি। বিভিন্ন সময়ে মামলাটি কয়েক দফা পরিবর্তন হয়ে যথাক্রমে ৯৬২/১৯৮০, ৩৬০/১৯৮৫ এবং সর্বশেষ মামলা নম্বর-৭৭/৯৩ ধারণ করে।'

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, '১৯৯৯ সালে নিম্ন আদালত থেকে ৭৭/৯৩ নং মামলায় আমাদের পক্ষে রায় ও ডিক্রি হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাসমি নাম ধারণকারী এক ব্যক্তি মালিক সেজে আপিল করে এবং বর্তমান ৪

রাজউকও একটি আপিল করে যার আপিল নং যথাক্রমে ৬১৯/১৯৯৯ এবং ৭০৯/১৯৯৯। মামলাগুলো নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত প্রায় ৩০ এর অধিক রায়ের অধিকাংশই আমাদের পক্ষে আসে, ২টি রায় বিপক্ষে গেলে আমরা চেম্বার কোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন নং ৩৯১/২০১৬, ৩৯২/২০১৬ দায়ের করলে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির কোর্টে আমাদের পক্ষে লিভ টু আপিল গ্রহণ করেন এবং মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।'

'আদালতের রায়ের আলোকে সিভিল আপিল ৪১০/২০১৭ এবং ৪১১/২০১৭ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে ২০২১ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করে ভূমিদসু্য নামে পরিচিত এমএনএইচ বুলু স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের সহায়তায় নিলামের মাধ্যমে ক্রয়ের বাহানা দিয়ে বাড়িটি দখল করতে আসে এবং বাড়ির সামনের অংশের কিছু জায়গা দখল করে নেয়। বিষয়টি আমি পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করি এবং অর্থঋণ আদালতে নিলাম বাতিল ও পজিশন ফেরত চেয়ে মামলা দায়ের করি যার নম্বর ৮/২০২১। পক্ষান্তরে এমএনএইচ বুলু নিলাম বাতিল চেয়ে আরও একটি মামলা করে যার নম্বর ২৪/২০২১। এই বিষয়টি কোর্ট এবং আমাদের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে।

উলেস্নখ্য, জনৈক এমএনএইচ বুলু আওয়ামী লীগ পরিচয় দানকারী তার অবৈধ অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে এবং কতিপয় দুর্নীতিপরায়ণ প্রশাসনের লোকজনের সহায়তায় নিকেতন, গুলশান, বনানী, নিকুঞ্জ ও উত্তরা এলাকায় অন্যায়ভাবে বহু পস্নট এবং জমি দখল করে রেখেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা দখলকৃত পস্নট যাতে বেহাত না হয় সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে আব্দুলস্নাপুর সংযোগ সড়ক, উত্তরা, কুড়িল, নদ্দা, কালাচাঁদপুর, নতুনবাজার, শাহজাদপুর, বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা, আফতাবনগর, মহাখালী, কাকলী ও বনানী এলাকায় আন্দোলনকে দমন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, 'ফ্যাসিবাদী অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সে তার দলবল নিয়ে রাতের আঁধারে দখলকৃত অংশটুকু ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে বাড়ির সম্পূর্ণ অংশের দখল আমরা ফিরে পাই। বর্তমানে সে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের নাম ভাঙিয়ে আমাদের প্রাণনাশের হুমকিধমকি দিয়ে পুনরায় বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে পুরো জায়গা দখল করার জন্য পাঁয়তারা করছে। যা আদালত অবমাননার শামিল। এছাড়াও বাড়ির গ্যাস, বিদু্যৎ, পানি এবং সিটি করপোরেশনের ট্যাক্সসহ সব বিল পূর্বেও আমাদের নামে ছিল বর্তমানেও আমাদের নামেই আছে।'

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, 'ভূমিদসু্য এমএনএইচ বুলুর অত্যাচারে আমাদের বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে উঠেছে। প্রতি মুহূর্তে জীবননাশের হুমকির মধ্য দিয়ে আমরা দিন অতিবাহিত করছি। প্রাণের ভয়ে আমার পরিবারের কেউ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে