এক মাসে সড়কে ঝরল ৪৭৬ জনের প্রাণ

যাত্রী কল্যাণের প্রতিবেদন

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিদায়ী আগস্টে সারাদেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত এবং ৯৮৫ জন আহত হয়েছেন। ওই এক মাসে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। ১৯৩টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৬ জন নিহত, ২০১ জন আহত হয়েছেন। এটা মোট দুর্ঘটনার ৪১ দশমিক ৩২ শতাংশ, নিহতের ৪৩ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং আহতের ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের মাসিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টে রেলপথে ১০টি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত, দুইজন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ৫০ জন নিহত, দুইজন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪৯০টি দুর্ঘটনায় ৫৩৪ জন নিহত এবং ৯৮৯ জন আহত হয়েছেন। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত ও ২৬১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। ২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৬ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৩ জন। সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে একজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ৯০ জন চালক, ৭৫ পথচারী, ৩৯ পরিবহণ শ্রমিক, ৫৪ শিক্ষার্থী, এক শিক্ষক, ৬৬ নারী, ৪৯ শিশু, তিন সাংবাদিক, এক আইনজীবী এবং ১২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। তাদের মধ্যে নিহত হয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য, ৭৬ জন বিভিন্ন পরিবহণের চালক, ৭৪ পথচারী, ৫৫ নারী, ৪৩ শিশু, ৩৩ শিক্ষার্থী, ১৭ পরিবহণ শ্রমিক, এক শিক্ষক, এক সাংবাদিক, এক আইনজীবী এবং ১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত ৭৪৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা গেছে, ৩১ দশমিক ৬৭ শতাংশ মোটর সাইকেল, ২১ দশমিক ২০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১০ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস, ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মোট দুর্ঘটনার ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২২ দশমিক ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ ট্রেন যানববাহনে সংঘর্ষ এবং চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ মাসে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরী ও ১ দশমিক ২৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে। আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনার উলেস্নখযোগ্য কারণ আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনার উলেস্নখযোগ্য কিছু কারণের কথা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এগুলো হলো- দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার কারণে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রম্নটি, যানবাহনের ত্রম্নটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহণ; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উলেস্নখ করা হয়েছে।