শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বিশ্ব ওজোন দিবসে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নতুন প্রজন্ম কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নতুন প্রজন্ম কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, 'আমাদের বা আগের প্রজন্মের ব্যর্থতার কারণে নতুন প্রজন্মকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।'

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে ঢাকায় বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'আমরা সহজ জীবন পেয়েছিলাম। সহজভাবে ভাবতাম, সহজ মতে চলতাম। কিন্তু আমাদের ব্যর্থতার কারণে তরুণ প্রজন্ম আগামী দেশের দায়িত্ব নেবে। তখন তারা কেউ রাজনৈতিক ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বিচারপতি বা সাংবাদিকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব নেবে। তারা প্রথম থেকেই কঠিন একটি বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'ওজোন স্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন দুটোই মানবসভ্যতাকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। কারণ আমরা যে কাজগুলো করি, তার পরিণাম আমরা চিন্তা করি না। আমরা গড্ডলিকা ধারায় গা ভাসিয়ে দিয়ে একটা ধারাকেই উন্নয়ন মনে করি। এটাকে নিয়ে প্রশ্ন করি না প্রকৃতি কতটুকু নিতে পারে। ওজোন স্তর নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনে প্রতিটি দেশই স্বাক্ষর করেছে। সার্বজনীন এই আইন বাস্তবায়নে বিশ্বসম্প্রদায় অতটা মনোযোগী না। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে আমাদের মতো দরিদ্র দেশ। আর ওজোন স্তরের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উন্নত বিশ্বের কিছু দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এখন পর্যন্ত যে অর্থ দেওয়ার কথা উন্নত বিশ্বের, তারা তা কোনো দিনও দেয়নি

কিংবা এর ধারেকাছেও যায়নি। ওজোন স্তরের ক্ষেত্রে সেই টাকাটা তারা দেয়। এখানে আরেক রকম বৈষম্য দেখতে পাই।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা যে এখন এয়ারকন্ডিশনে বসে আছি সেটাও এখানে ভূমিকা রাখছে। ফোমের প্যাকেটে বাসায় স্যান্ডুয়েজ আনি, বার্গার আনি সেটাও ভূমিকা রাখছে। ফলে আমাদের ভোগবাদের সঙ্গে, জীবন মানের সঙ্গে এটার একটা সম্পর্ক রয়েছে। দেখেন দুপুর সাড়ে ১২টায় কতগুলো বাতি জ্বালিয়ে বসে আছি। এটাই হচ্ছে আমাদের পরিকল্পনার দৈন্যতা। আমরা ভবন তৈরিতে এমন পরিকল্পনা করি যাতে ভর দুপুরে আলো জ্বালানোর প্রয়োজন হবে না। মন্ত্রণালয়কে বলেছি আগামীতে এমন ভুল ডিজাইন যেন আমরা না করি। আমরা যেন মাটি পোড়ানো ইট ব্যবহার না করি।'

সেমিনারে পরিবেশ অধিদপ্তর মহাপরিচালক ডা. আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সচিব ডা. ফারিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক (বায়ুমান) মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।

'এক বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি'

এদিকে, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, আগামী দশ বছরে বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি। এ বছরের জন্য ১৫ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা হয়েছে। এ সহায়তা নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে ব্যবহার হবে।

তিনি বলেন, জার্মানি ও বাংলাদেশ বেসরকারি খাত, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে সহযোগিতা ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টারের সঙ্গে বৈঠকের পর এ তথ্য জানান।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এ সহযোগিতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী ও যুবসমাজকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে জার্মানির অব্যাহত সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জার্মানি সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কারিগরি সহায়তা দেবে।

বৈঠকে নদী পরিষ্কার, পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে