ওসি'র রিসোর্ট কান্ড গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম এক কলেজছাত্রীকে রিসোর্টে রেখে রাত্রিযাপনের ঘটনায় গাজীপুর আদালতে মামলা হয়েছে।
গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তা ও স্টেনোগ্রাফারের বিরুদ্ধে গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রোববার মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী (১৯)। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা। আদালত গাজীপুর পিবিআইকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে আদেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার দক্ষিণ স্বরমঙ্গল গ্রামের সৈয়দ মো. মিজানুর রহমান, সাবেক পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম, ওসি ডিবি দেলাওয়ার হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্টেনোগ্রাফার মো. আব্দুল করিম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৭ জানুয়ারি রাতে ওই কলেজছাত্রীর ফোন পেয়ে গাজীপুরের একটি রিসোর্ট থেকে উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। পরে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা পেতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী শফিকুল আলম ও ডিবি পুলিশের ওসি দেলাওয়ার হোসেনের পরামর্শে ওই ওসির প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ১৮ জানুয়ারি কলেজছাত্রীকে বিয়ে করেন ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান। বিয়ের পর ওসি মিজান একদিনের জন্যও ওই ছাত্রীর সঙ্গে সংসার করেননি এবং কোনো খোঁজখবর নেননি। ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্ট করে গত এপ্রিলে ওই কলেজছাত্রীকে গোপনে একতরফা তালাক প্রদান করেন ওসি মিজান।
রোববার দুপুরে কলেজছাত্রী তার মাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের জানান, রিসোর্ট থেকে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করে তাকে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যায়। তার কাছে সব জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু বিচার না করে উল্টো তাকে মিজানের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ধর্ষণ মামলা থেকে রক্ষা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারে ওসি মিজানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে এসপি কাজী শফিকুল আলম তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন, মিরাজুল ইসলাম ও ওসি ডিবিকে ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওসি মিজান দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দায়সারা রিপোর্ট প্রদান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। গাজীপুরের সাবেক এসপিসহ তার অধীন কর্মকর্তারা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি এ ঘটনার জন্য তাদের বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিয়ে করেছি। বনিবনা না হওয়ায় গত এপ্রিলে আইন মেনে তালাক দিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে গাজীপুরের সাবেক এসপি কাজী সফিকুল আলমের মোবাইলে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।