রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
চার বিভাগে ভারী বৃষ্টি ও চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কবার্তা

পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার শঙ্কা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার শঙ্কা

দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে এবার স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এছাড়া মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের চার বিভাগে আরও তিন দিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পাশাপাশি চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সরকারের সংস্থা দুটির পৃথক সতর্কবার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশের বন্যা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার দায়িত্বে থাকা ওই দুই প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাস বলছে ফেনী, চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকার উজানে ভারতীয় অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। অনেকটা গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া বৃষ্টির মতো। এতে বাংলাদেশের ভেতরে দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলজুড়ে আজ শুক্রবারের মধ্যে একই ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ফলে জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হতে পারে।

এছাড়া আজ শুক্রবার থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলা সিলেট, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্ণীপুর, কুমিলস্না, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক পানির ঢল নামতে পারে। ফলে ওই এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চলও পস্নাবিত হতে পারে। দেখা দিতে পারে স্বল্পমেয়াদি বন্যা।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, 'বৃষ্টির কারণে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিলস্না, লক্ষ্ণীপুর, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জেলার নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় কয়েক দিনের জন্য বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।'

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে আরও বলা হয়েছে, 'বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। কয়েকটি এলাকায় এক দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে ফেনী, মাতামুহুরি, হালদা, সাঙ্গু ও মুহুরি নদীর পানি দ্রম্নত বাড়তে পারে।'

সংস্থটি জানায়, ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগে এবং এর উজানে ভারতীয় অংশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন ওই বৃষ্টি চলতে পারে। ফলে সিলেটের প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ধলা ও সারিগোয়াইন নদীর পানি দ্রম্নত বাড়বে। এতে ওই নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল আজ শুক্রবার থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পস্নাবিত হতে পারে।'

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের চার বিভাগসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে আরও তিন দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। বিশেষ করে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টি বেশি হতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেটের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। এতে এসব এলাকায় পাহাড় ধসেরও আশঙ্কা আছে।

সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।

এদিন আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘ তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে