শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতাল
দুর্নীতির কারণে তোপের মুখে পরিচালক
প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
খুলনা অফিস
দুর্নীতির কারণে তোপের মুখে পড়েছেন খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আবু শাহীন। বুধবার পরিচালকের অপকর্মের তথ্য তুলে ধরে হাসপাতালের অডিটর রুমে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, স্টাফ নার্স ও অন্যান্য পদবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামানকে জোর করে পদত্যাগ পত্রে তার স্বাক্ষর করান পরিচালক আবু শাহীন।
জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবার আওতা বাড়াতে সরকারের অর্থায়নে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কাজের শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে পরিচালকের বিরুদ্ধে। তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাট করেছেন। আর তার সহযোগী ছিলেন একই হাসপাতালের আরএমও ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ।
সিনিয়র স্টাফ নার্স সুরাইয়া আক্তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'বর্তমান শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক আবু শাহীন ও একই হাসপাতালের আরএমও ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথসহ কিছু অসাধু স্টাফ নিয়ে দুর্নীতির চক্র গড়ে তোলেন। এমনকি হাসপাতালের কিছু অ্যাম্বুলেন্স মেরামত করানোর জন্য তারা গত জুন মাসে ৬/৭ লাখ টাকা তুলে নিলেও কোনো কাজ করাননি।
তবে বিভিন্ন সময়ে মিটিংয়ের নাম করে সরকারি গাড়ি ব্যবহার, ওষুধ চুরি, ওটি রুমের ৮ লাখ টাকার মেশিং চুরি হাসপাতালের স্টাফরা চুরি করেছেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
উলেস্নখ্য, এর আগে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় আর্থিক অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তদন্তে। এ বিষয়ে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে প্রকল্প তৎকালীন মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম তদন্তে গত বছরের জুনে অনুষ্ঠিত পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ একটি কমিটি গঠন করে। গত সেপ্টেম্বরে ওই কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে। কমিটি নানা অনিয়মের প্রমাণও পায়। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আরেকটি পিইসি সভায় এসব বিষয় উলেস্নখ করেন একজন যুগ্ম প্রধান। ওই সভায় জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিক পরিকল্পনা ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
এসব কারণে তদন্ত কমিটি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক অদক্ষতা ও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছিল।
তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে এবং পিইসি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রতিপালনে যথেষ্ট ঘাটতি ও অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মনে করেন হাসপাতালের স্টাফরা।
এসব বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আবু শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা পিছনের সব ভুলে নতুন করে হাসপাতালের সেবার মান বাড়াতে একযোগে কাজ করব।'