রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভল্ট থেকে টাকা নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা উধাও

চাঁদপুর প্রতিনিধি
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ভল্ট থেকে টাকা নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা উধাও

চাঁদপুরের মতলব-উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর এমন অভিযোগ উঠেছে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষের (৩৮) বিরুদ্ধে। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মতলব-উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন।

এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া গত ২ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মতলব-উত্তর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে উলেস্নখ করা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করলে তিনি জানান, বাবা অসুস্থ আসতে দেরি হবে। দীর্ঘসময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে আবার তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ওইদিন প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। তিনি জানান, 'আমার স্বামী অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন।'

কিন্তু ওইদিন বিকাল হয়ে গেলেও দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত হননি। যার ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে তার কার্যকলাপে সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।

ব্যবস্থাপক বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভল্টে থাকায় নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মোতাবেক গত ৩০ আগস্ট মতলব-উত্তর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

১ সেপ্টেম্বর রোববার থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরস্থ প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুবিস্নকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা পাওয়া যায়।

ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ছিল। অর্থাৎ ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।

মামলায় আরও উলেস্নখ করা হয়, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ বিগত কিছুদিন ধরে মাঝেমধ্যে একটি কাঁধের ব্যাগ নিয়ে আসত এবং ওই ব্যাগ নিয়ে অফিস ত্যাগ করত। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ব্যাংকের ভল্টের একটি চাবি তার কাছে রক্ষিত থাকাতে কৌশল অবলম্বন করে সে নিজে অথবা অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বলেন, 'আমি বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন এবং থানার পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে'।

মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে