মাজারের নিরাপত্তায় সেনা মোতায়েনের দাবি
প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
১২ আউলিয়ার দেশে মাজার ভেঙে নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যে যার ধর্ম পালন করবে, এটাই তো স্বাধীনতা। কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা করা হচ্ছে, ভাঙচুর করা হচ্ছে। তাই যেসব দরবার ও মাজারে চরমপন্থীদের হামলার হুমকি রয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওইসব দরবার ও মাজারে সেনা সদস্য মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছে তরিকতপন্থি ছাত্র সংগঠন।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাজার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে 'সর্বজনীন তরিকত সূফী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ' ও তরিকতপন্থি ছাত্র সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তোমার ধর্ম তুমি করবে, আমি করব আমার। নিজ ইচ্ছা চাপায় যে, সে হচ্ছে স্বৈরাচার। আজকে শাহজালালের মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে, শাহ পরানের মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে। মাজার ধ্বংসের একটা নীলনকশা করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আপনারা এর থেকে সরে আসুন। আমাদের অস্থির করলে আপনারা পালানোর সময় পাবেন না। তাই বলছি, মাজারওয়ালাদের খেপাবেন না।
অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে তারা বলেন, আমরা অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই- আপনারা যদি মন্দির রক্ষা করতে পারেন, প্যাগোডা রক্ষা করতে পারেন, তাহলে মাজার রক্ষায় কী সমস্যা আপনাদের?
এ সময় মানববন্ধনে তরিকতপন্থি ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। তাদের দাবি হলো- অবিলম্বে দেশের মাজার, দরবার ও খানকাহ শরিফ ভাঙার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। যেসব মসজিদে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রচার করার মাধ্যমে তরিকতপন্থি মাজার ও দরবার ভাঙচুরে উসকানি দেওয়া হচ্ছে অতি শিগগির তাদের শাস্তি প্রদান করতে হবে। উগ্রবাদীদের হামলায় যেসব তরিকতপন্থি আহত হয়েছে, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। উগ্রবাদীদের হামলায় যারা নিহত হয়েছে প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে বিচার করতে হবে। দেশের সব মাজার, দরবার ও খানকাহ শরিফের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে যেসব ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক বিবৃতি দিয়ে ধর্মীয় দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে, অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দেশের সব তরিকতপন্থির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেসব দরবার ও মাজারে চরমপন্থিদের হামলার হুমকি রয়েছে- আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওইসব দরবার ও মাজারে সেনাসদস্য মোতায়েন করতে হবে। যেসব দরবার এবং মাজার শরিফে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে ধর্ম-উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওইসব প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিবৃতি প্রদান করতে হবে এবং যেহেতু ইতোমধ্যে অনেক দরবার ও মাজারে হামলা হয়েছে, তাই অবিলম্বে দরবার ও মাজারগুলোর নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেল গঠন করতে হবে। এই সেলে একাধিক হটলাইনের মাধ্যমে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা দরবার ও মাজারগুলোকে নিরাপত্তা সেবা প্রদান করতে হবে। এসময় মানববন্ধনে জাকির হোসেন চিশতী, খাজা বেনজীর হক চিশতী নিজামী, শাহ সুফি কিরন চিশতী নিজামী, সামসুজ্জামান চৌধুরী সবুজ, আবুল বারেক চিশতী, বেনজীর নূরী সুরেশ্বরী, আরিফ দেওয়ানসহ সারাদেশের বিভিন্ন মাজার, দরবার শরিফের অনুসারীরা ছিলেন।