কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শ্রমিকদল কর্মী রিয়াজুল তালুকদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ এনে শেখ হাসিনাসহ ১৩৫ জনের নামে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ অভিযোগ ও মামলা হয়।
এদিন ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের তদন্ত সংস্থায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলো- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী আসিফ ইনান, পুলিশ কর্মকর্তা বিপস্নব কুমারসহ ৩৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১) (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শ্রমিক দলের কর্মী রিয়াজুল তালুকদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে নিহতের ভাই রুবেল তালুকদার বাদী হয়ে এই মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জহিরুল হাসান মুকুল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার উলেস্নখযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোলস্না সজল, সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, নাহিম রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ প্রমুখ। এ ছাড়া মামলায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের আরও ৩৫০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বিকাল ৫টায় যাত্রাবাড়ী থানার চার রাস্তার মোড়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা এক দফা আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করছিল। সে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের সব অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। এ সময় বাদীর ভাই যাত্রাবাড়ী থানার শ্রমিক দল কর্মী মো. রিয়াজুল তালুকদার গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।