নাটোরের বড়াইগ্রামের চাঁন্দাই ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই গ্রম্নপের সংঘর্ষে ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ১৪ দোকান এবং ৯টি বাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত ও সোমবার সকালে উপজেলার চাঁন্দাই ইউনিয়নের দাসগ্রাম এলাকায় দফায় দফায় ওই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা বিএনপি।
আহতরা হলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু (৩৯), বিএনপি কর্মী মামুন হোসেন (২১), সাগর আলী (২০), মশিউর রহমান (২৮), জাহিদ আলী (১৮), মেহেদী হাসান (২৮) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহিন মালিথা (৬০)।
ইউনিয়ন বিএপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম টিপু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা বিপস্নবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা।
রবিউল ইসলাম টিপু বলেন, শনিবার জনি (২৮) নামের এক ছাত্রদলের কর্মীকে মারপিট করে হাবিবুর রহমান ও তার লোকজন। রোববার সন্ধ্যায় শতাধিক লোকজন নিয়ে এসে দাসগ্রাম বাজারে ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় হাবিবুর রহমানের ভাই সাইদুল ইসলাম ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকে। লোকজন পালিয়ে গেলে দাসগ্রাম বাজার ও রাজেন্দ্রপুর কুদুর মোড়ের ১৪টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
হাবিবুর রহমান বলেন, রবিউল ইসলাম টিপু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহুরুল মালিথা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ সরদার, যুবলীগ নেতা হান্নান সরদার আমার দোকানঘর ভাঙচুর ও যুবদলের কার্যালয় ভাঙচুর-লুটপাট করে। আমার সমর্থকরা গিয়ে তাদের প্রতিহত করেছে। গুলি করার বিষয়ে বলেন, কারা গুলি করেছে বিষয়টি জানা নেই।
ওসমান মোলস্না নামের বেকারির মালিক বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগ সমর্থন করি। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ভিতরে কাজ করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। দোকান থেকে বের হয়ে দেখি ককটেল ফাটানো হয়েছে। কয়েকজন হেলমেট পরে গুলি করছে। আমি পালিয়ে গেলে আমার বেকারির দোকান ভাঙচুর করে।'
মজিবুর রহমান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কেউ এলাকায় নাই। তাদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে আমাদের উপর কেন দোষ চাপানো হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ডলি রাণী বলেন, আহতদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ ও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬ জনের শরীরে রাবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শাফিউল আযম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।