শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শাহবাগে ৩৫ প্রত্যাশীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা নূ্যনতম ৩৫ করার দাবিতে শনিবার রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা -যাযাদি

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা নূ্যনতম ৩৫ (শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত) করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ফলে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে শাহবাগসহ আশপাশের অন্যান্য এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নূ্যনতম ৩৫ করার দাবিতে চূড়ান্ত ছাত্র মহাসমাবেশের আয়োজন করেন তারা। সেখান থেকে দুপুর ১টার দিকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা।

এ সময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বয়স না মেধা- মেধা মেধা, আর নয় কালক্ষেপণ- এবার দাও প্রজ্ঞাপন, ৩০ এর শৃঙ্খল- ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, ৩৫ আমার ঠিকানা, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশে বৈষম্যের ঠাঁই নেই, সারা বাংলায় খবর দে, ৩০-এর কবর দে,- এমন বিভিন্ন সেস্নাগান দিতে থাকেন।

শাহবাগ থানার ওসি শাহাবুদ্দিন শাকিল বলেন, দুপুরের দিকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। সেখান থেকে আন্দোলনকারীরা হঠাৎ করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনের ফলে এ এলাকায় আপাতত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সারাদেশ থেকে আগত চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশীরা বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করেন। সমাবেশে আন্দোলনকারীরা বলেন, 'বিশ্বের প্রায় ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। ভারতসহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে নূ্যনতম ৩৫ বছর করেছে। কিন্তু আমাদের মাত্র ৩০ বছর। নতুন বাংলাদেশে আমরা এই বৈষম্য মানি না।'

আন্দোলনকারীরা বলেন, বাংলাদেশের সব পর্যায়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা এখন থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়। যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক।

তারা বলেন, গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ২০১১ সালে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি না করে সেটি ৩০ বছরেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়, যার কারণে দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সমাবেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'পরিবর্তনের এই লড়াই আমাদের সবার। আমি ৩০ বা ৩৫ বুঝি না। সরকারি চাকরিতে আবার বয়সসীমা কী? যোগ্যতা থাকলে কেউ ৪০ বছরেও

পেতে পারে। তবে সরকার স্থিত হতে না পারলে বোধহয় দাবির বিষয়ে বলতে পারবে না। আনসারদের সময়েও তারা একই বিষয় বুঝিয়েছিল।'

শিক্ষক নুরুজ্জামান হীরা বলেন, যারা পরে যোগ দেবেন, তারা সে অনুযায়ী বেতন ভাতা পাবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ করব, একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ নিয়োগ করে বসে এই সমস্যার সমাধান করুন। শাকিল নামে আরেক শিক্ষক বলেন, ৩৫ আন্দোলনের বিকল্প নাই। সচিবরা এখানে আউটসোর্সিংয়ের একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছে। শিক্ষার্থীরা তো মেধা দিয়ে প্রবেশ করতে চায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে