সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং খুলনা ৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান বাবুর দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার নিজ নামে, স্ত্রী ও পরিবারের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
হবিগঞ্জ-৪-এর সাবেক এই সংসদ সদস্য তার আত্মীয়-স্বজনের নামে সিন্ডিকেট তৈরিপূর্বক এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ঢাকার সম্পদের তথ্য উপার্জন করেছেন। এ ছাড়া তার দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে মো. মাহবুব আলী পরাজিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কাছে। এর আগে ২০১৪ সালে অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
আখতারুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট কেনাসহ স্ত্রী ও নিজ সন্তানদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। সংসদ সদস্য হয়েও স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিজ নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজের নামে কাজ করে দেশের আইন লঙ্ঘন করেছেন।
খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বাবু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা ৬ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেন। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলটির মনোনয়ন পাননি।
অন্যদিকে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, ভুয়া রোগী সাজিয়ে সরকারি অনুদানের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। করোনাকালে প্রশিক্ষণ না করিয়ে বিল উত্তোলন, কাজ না করেই টিআর, কাবিখার মতো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, মায়ের নামে করিমপুর নূরজাহান-সামসুন্নাহার মা ও শিশু বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার নিজ নামে, স্ত্রী ও পরিবারের নামে দেশে-বিদেশে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি লালমনিরহাট ২ আসন থেকে জয় লাভ করেন। ২০১৯ সালে তিনি সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।