আজকের যায়যায়দিন

জ্বালানি সরবরাহের সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, জবাবদিহিতা তথা জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করতে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ভোক্তা যেন সঠিক মাপ ও মানে বিদু্যৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেবা পায় সেজন্য এসব দাবি জানানো হয়।

রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম।

ক্যাবের দাবি হচ্ছে-

১. অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয় ও পণ্য মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং সংকট মোকাবিলা করার লক্ষ্যে ৩ বছরের মধ্যে বিদু্যৎ ও প্রাথমিক জ্বালানির মূল্যহার বৃদ্ধি করা হবে না মর্মে সরকারের কাছ থেকে এমন ঘোষণা করা।

২. সেই লক্ষ্যে বিইআরসির আওতায় ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২৪-এর আলোকে জ্বালানি খাত সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য একটি জ্বালানি খাত সংস্কার কমিশনের দাবি। সংস্কার প্রস্তাবে বিদু্যৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহে লুণ্ঠনমূলক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয় এবং ভোক্তার জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করার

জন্য একটি কর্মপরিকল্পনারও দাবি।

৩. বিইআরসির চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছে। সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। তাদের স্থলে অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ, দক্ষ, সৎ পেশাজীবীদের নিয়োগ সার্চ কমিটির মাধ্যমে চাই। অংশীজনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি গঠনের দাবি।

৪. জ্বালানি অধিকার সুরক্ষায় জ্বালানি খাতের আওতাধীন বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালনা বোর্ড/সংস্থাগুলোর বিভিন্ন পদে পদস্থ ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি।

৫. একই সঙ্গে পেট্রোবাংলা, বিপিসি, পিডিবি, আরইবি, স্রেডা এবং বিদু্যৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি খাতের বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ পদের কর্মকর্তাদের পরিবর্তন চাই। বিদু্যৎ এবং জ্বালানি সম্পদ উভয় বিভাগেও অনুরূপ পরিবর্তন চাই। বিদু্যৎ ও জ্বালানি খাত পরিচালনায় মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বের অবসানের দাবি।

৬. বিইআরসির দ্বারা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে অংশীজনদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের দাবি।

৭. বিইআরসিকে সক্ষম ও কার্যকর করার জন্য মন্ত্রণালয়কে কেবল আপস্ট্রিম তথা পলিসি রেগুলেটরের দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে-এমন দেখতে চাই।

৮. বিইআরসি আইনের সংশোধনী ৩৪ক বাতিল হয়েছে। বিদু্যৎ ও জ্বালানি দ্রম্নত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ বাতিল চাই। এবং প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগ ও ক্রয়-বিক্রয় আইন দ্বারা নিষিদ্ধ দেখতে চাই।

৯. ২০১২ সালে বিইআরসি প্রস্তাবিত পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের (পেট্রোল, ডিজেল, ফার্নেসওয়েল, কেরোসিন ইত্যাদি) মূল্যহার নির্ধারণ সংক্রান্ত তিনটি প্রবিধানমালা কার্যকর দেখতে চাই।

১০. কস্ট পস্নাস নয় কস্ট বেসিসে লুণ্ঠনমুক্ত মুনাফাবিহীন সরকারি জ্বালানি সেবার দাবি।

১১. বিদু্যৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের যে কোনো পর্যায়ের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ এবং জ্বালানি অপরাধী হিসেবে তাদের বিচারের দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান (রাজু) ছিলেন।