সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে সেটা অর্থবহ হবে না - জামায়াতে আমির
প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে সেটা অর্থবহ হবে না বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অতীত সরকারের সকল জঞ্জাল পরিষ্কারের পাশাপাশি একটি সুন্দর সভ্য দেশ গড়তে এবং অর্থবহ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করতে যতটুকু সময় লাগবে অন্তর্বর্তী সরকারকে ততটুকুই দেওয়া হবে।
রোববার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার আলাউদ্দিন নগর শিক্ষা পার্ক অডিটরিয়ামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, 'এই বিপস্নব, এই গণঅভু্যত্থান কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের নয়, বিশেষ দলের নয়, শুধু ছাত্রছাত্রীদেরও নয়- ছাত্রছাত্রীদের নেতৃত্বে আপামর জনতার। এই বিপস্নব একদিনে জমে ওঠেনি। এটি ছিল সাড়ে ১৫ বছরের জুলুম, বঞ্চনা, দুর্নীতি-লুটপাট, মানুষের ইজ্জত নিয়ে খেলা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলার একটা বিস্ফোরণ।'
তিনি বলেন, 'ছাত্রছাত্রীরা জাতিকে বদলানোর জন্য রাস্তায় নামেনি। তারা তাদের একটা ন্যায্য
দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছিল। তৎকালীন গণবিচ্ছিন্ন প্রধানমন্ত্রী তাদের একটা গালি দিলেন। সেই গালি তাদের রক্তে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এই আন্দোলনে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাষ্ট্রের তা রাষ্ট্রের দুশমনরা করেছে। যারা এই আন্দোলনকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল। এটিকে একটা উচ্ছৃঙ্খল জঙ্গি আন্দোলন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে তারা বিশ্বের বুকে অপমানিত করতে চেয়েছিল। এটি তাদের কাজ, দুর্বৃত্তদের কাজ।'
'আমরা আগেও দাবি জানিয়েছি, এখনো দাবি জানাই জাতিসংঘের সহায়তায় একটা একটা নিউট্রাল থরো ইনকোয়ারি হোক। কারা দুষ্কৃতকারী, কারা অপরাধী বের হয়ে আসুক'- বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, 'বেদনার সঙ্গেই বলতে হয়, বিগত সরকার ক্ষমতায় এসেছিল ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি। শপথ নিয়েই তারা জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল, পরের মাসের ২৬ এবং ২৭ তারিখে ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যা সংঘটিত হলো। বিডিআরের মহাপরিচালকসহ ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক অফিসারকে হত্যা করা হলো। মা-বোনকে নির্যাতন করা হলো।'
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, 'তারা তো আমাদের প্রতিবেশী। আমরা তাদের বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, এখনো চাই। আমার প্রতিবেশী শান্তিতে থাকলে আমিও শান্তিতে থাকবো। আমি আমার প্রতিবেশীকে কষ্ট দিলে আমাকেও কষ্ট পাওয়ার জন্য তৈরি থাকতে হবে। কেন আমরা সেটি করবো? আমরা তাদের সঙ্গে সমতা, ন্যায্যতা এবং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে একটা বন্ধুসুলভ, প্রতিবেশী সুলভ সহঅবস্থান চাই।'
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুষ্টিয়া জেলা শাখার আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের নির্বাহী সদস্য ও পরিচালক মোবারক হোসাইনসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত চৌদ্দ পরিবারের মাঝে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন তিনি।