চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বন্যাদুর্গত ১৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্তের জন্য ওএমএস কর্মসূচির আওতায় সাশ্রয়ী মূল্যে চাল-আটা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, এসব এলাকায় ২৩০টি কেন্দ্র থেকে দৈনিক ২৩০ টন চাল ও ২৩০ টন আটা বিতরণ করা হবে।
প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা এবং প্রতিকেজি আটা ২৪ টাকা হিসেবে (২ কেজি আটার প্যাকেট ৫৫ টাকা) বিক্রি করা হবে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের জন্য এসব এলাকায় বরাদ্দ করা হয়েছে ১৪ লাখ ৪৯০ টন চাল ও ১৪ লাখ ৪৯০ টন আটা। এই তিন মাসে চাল ও আটায় ভর্তুকি বাবদ সরকারের মোট ৯০ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৮২ টাকা খরচ হবে বলে জানান সচিব।
বন্যাদুর্গত এলাকার বাইরে বর্তমানে সারাদেশে ৯১২টি কেন্দ্র থেকে ওএমএসের মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কিনতে পারছেন। প্রতি কেন্দ্রের জন্য দৈনিক এক টন চাল ও এক টন আটা বরাদ্দ রয়েছে।
এর বাইরে সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সারাদেশে শুরু হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এর উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ ১০ হাজার ৯৯৪টি।
এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি পরিবার মাসে একবার ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন।
বোরো সংগ্রহের খবর
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ করার সময় ছিল। এর মধ্যে সেদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যের তুলনায় ১০২ শতাংশ। আর আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যের তুলনায় ১২৪ শতাংশ। তবে ধান সংগ্রহ কম হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫৯ শতাংশ।
সচিব জানান, প্রতিকেজি ৪৫ টাকা দরে ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১১ লাখ ২৫ হাজার ৩৮১ টন সংগ্রহ হয়েছে।
আর ৩২ টাকা কেজি দরে ৫ লাখ টন ধান সংগ্রহ করতে গিয়ে এসেছে মাত্র ২ লাখ ৯৬ হাজার টন। ৪৪ টাকা কেজি দরে আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে এক লাখ ২৪ হাজার টন; যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ
টন। ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন গম সংগ্রহের লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সেখানে গম এসেছে মাত্র ৩৭ হাজার টন।
সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য সচিব দাবি করেন, গত ১৫ দিন চালের দাম বৃদ্ধির পর এখন কমতির দিকে রয়েছে। তবে গণমাধ্যমের খর অনুযায়ী বন্যায় ত্রাণ তৎপরতার কারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে ঢাকায় প্রতিকেজি সাধারণ মানের চাল প্রতিকেজি ৪৯ টাকা, মধ্যম মানের চাল ৫৫ টাকা এবং উন্নত জাতের চাল ৬৪ টাকা করে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
দেশে বর্তমানে ধান, চাল, গমসহ মোট ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩৩ টন খাদ্যের মজুদ আছে। পাশাপাশি চলমান আছে বেসরকারি পর্যায়ের ১ হাজার ৫০০ অটো রাইস মিল। আমদানি করা ৫০ হাজার টন গম খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। আর দেশের গুদামে রয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৯১ টন গম। চল রয়েছে ১৪ লাখ ৬০ হাজার টন।