নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ বিএনপির

দলের মূল কাজ প্রতিষ্ঠাতার আদর্শ বাস্তবায়ন : ফখরুল

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ শীর্ষ নেতারা -যাযাদি
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৪৭ বছরে পা দিয়েছে দেড় যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকালে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। স্বৈরতন্ত্রের পতনের পরে 'মুক্ত পরিবেশে' নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিয়েছেন তারা। বেলা ১১টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শহীদ জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। পরে সংবাদমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাবেন তারা। এ সময় স্বৈরতন্ত্রের পতনের পরে 'মুক্ত পরিবেশে' নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, 'বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন, বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য নিজে কাজ করছেন, সেই বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য আজকে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি, শপথ নিয়েছি। যে কোনো বালাই আসুক, সব চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা করা, মুক্তবাজার অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা কাজ করে যাব- এটা আমাদের শপথ।' বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আজকে ২০২৪ সালে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি তার জন্য বিএনপি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে। বিএনপির সবচেয়ে বেশি নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছেন, ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে শুধু গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য। আমরা আজকে এদিনকে স্মরণ করছি। আলস্নাহর অশেষ রহমতে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আজকে আমরা এই দিনটিকে মুক্ত স্বাধীন পরিবেশে পালন করতে পারছি।' তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, বিএনপি সবসময় নেতৃত্ব দিয়েছে, আগামী দিনে সঠিক রাজনীতি এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সঠিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। এখন বিএনপির মূল কাজ হচ্ছে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই আদর্শগুলোকে বাস্তবায়িত করা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তাকে প্রতিষ্ঠিত করা।' বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে দলের প্রতিষ্ঠাতার মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে নেতাকর্মী-সমর্থকদের ঢল নামে। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসে। তারা 'শুভ শুভ জন্মদিন, বিএনপির জন্মদিন', 'লও লও লও সালাম, জিয়া তুমি লও সালাম', এক জিয়া লোকান্তরে লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে', 'আজকের এই দিনে জিয়া তোমায় মনে পড়ে' ইত্যাদি স্স্নোগানে বিজয় সরণি থেকে চন্দ্রিমা উদ্যান সরব করে রাখে নেতাকর্মীরা। কর্মীরা রঙিন ব্যানার নিয়ে আসেন। কর্মীদের মাথায় বাঁধা ছিল বিএনপির পতাকা সংবলিত ফিতা। দীর্ঘ বছর পরে এই প্রথম জিয়ার সমাধিস্থলে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। অতীতে পুলিশি নিরাপত্তার কারণে নেতাকর্মীদের মিছিল এবং প্রবেশে নানা বিধিনিষেধ ছিল। জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বের পর শহীদ নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এই সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উলস্নাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ বিএনপি নেতা মীর সরফত আলী সপু, ডা. রফিকুল ইসলাম, নাজিমউদ্দিন আলম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শাম্মী আখতার, মাহবুবুল হক নান্নু, হারুনুর রশীদ, সেলিম রেজা হাবিব, কাজী আবুল বাশার, আমিরুজ্জামান শিমুল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুলস্নাহসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা ছিলেন। ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন- সাইফুল ইসলাম নিরব, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন ছাড়াও মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খানসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।