বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের আমলেই নিয়োগ পাওয়া ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের ১৫ জন বিগত 'আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক' দাবি করে তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে আইনজীবীদের অপর একটি অংশ।
শনিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলকে (ডিএজি ও এএজি) ধাওয়া দিয়েছেন আইনজীবীরা।
অ্যাটর্নি অফিসে নবনিযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের আগে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় 'বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ'-এর ব্যানারে 'নিয়োগবঞ্চিত বিএনপি সমর্থিত ও সাধারণ আইনজীবীরা' এই প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক ডিএজি ও এএজিদের নির্ধারিত সভায় প্রবেশে বাধা দিয়ে তাদের ধাওয়া করেন প্রতিবাদকারীরা।
নতুন নিয়োগ পাওয়া এই ১৫ ডিএজি ও এএজি হলেন- সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী, সাইফুদ্দিন খালেদ, সুলতানা আক্তার রুবি, ফয়েজ আহমেদ, সৈয়দা সাজিয়া শারমিন, মো. জমারত আলী, মো. আবুল হাসান, রোহানী সিদ্দিকা, আঞ্জুমান আরা লিমা, চৌধুরী শামসুল আরেফিন, আশিক রুবাইয়াত, কাজী তামান্না ফেরদৌস, শিউলি খানম, তাশরিফা সুলতানা জলি এবং সুমাইয়া বিনতে আজিজ।
বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও নবনিযুক্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম রেজা বলেন, 'আমরা আজ বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ সেসব আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি, যারা ছাত্র হত্যাকারীদের দোসর, ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী। যাদের আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের বিনিময় দেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করেছে; যারা ছাত্রদের বুকে গুলি করার পক্ষে আদালতে শুনানিতে উপস্থিত হয়েছে।'
'তাদের আবার অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে পুনর্বাসন করা হয়েছে' অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'আমরা তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছি। তারা 'শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর রিট'-বিষয়ে ঘোর বিরোধিতা
করেছিলেন। তাদের হাতে আমার শহীদ ছাত্র-জনতার রক্ত, তারা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে থাকলে শহীদ ভাইদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। আমরা এর ঘোর বিরোধিতা করছি এবং আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে যোগদান না করে। অন্যথায় আমরা তাদের যোগদানে বাধা হয়ে দাঁড়াব।'
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ বলেন, 'সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ছিলেন। আমি তার কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলাম, তাই এতদিন মুখ খুলিনি। এখন বিবেকের তাড়নায় না বলে পারছি না। উনার নেতৃত্বে একটা সিন্ডিকেট ডিএজি-এএজি নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। আর এ জন্যই যখন আমি স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে কথা বলছি, তখন উনার কাছে সেটাকে উসকানি মনে হচ্ছে। বিএনপির নেতাদের বলব, উনার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক। উনাদের মতো আওয়ামী লীগ থেকে আসা লোকদের কারণেই দলের বদনাম হচ্ছে। আমার অভিযোগ ভিত্তিহীন হলে আমাকে বহিষ্কার করতে পারেন, আমি মাথা পেতে নেব।'
জানা গেছে, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের কাছে প্রায় ১৫-১৬ জন ডিএজি-এএজির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বিগত আওয়ামী সরকারের দোসর।