সার ও মসুর ডাল দিয়ে অন্তর্র্বর্তী সরকারের কেনাকাটা শুরু

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মসুর ডাল ও সার কেনার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ ভবনের চতুর্থ তলায় ক্রয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অন্তত আটজন উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বর্তী সরকারের ক্রয় কমিটির প্রথম বৈঠক। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফাটিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৯০ হাজার টন বস্নাক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। এর মধ্যে কাতার থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং কাফকো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনা হবে। বৈঠকে সার কেনা সংক্রান্ত যে তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তার অনুমোদন চাওয়া হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সার কেনার এই তিন চুক্তিই করা হয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগেস্নাব থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বস্নাক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ৩৪৪.৫০ মার্কিন ডলার। আরেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কাতারের মুনতাজাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বস্নাক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১২০ কোটি ৬ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৩৯.১৭ মার্কিন ডলার। এই সারও রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় আমদানি করা হবে। সভায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাফকো থেকেও ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই সার কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৭ কোটি ৭৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ব্যাগিং চার্জসহ প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৩২.৭৫ মার্কিন ডলার। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগেস্নাব ডিসটিবিউশন লিমিটেড থেকে ফার্ম ২.৭০ লাখ মেট্রিক টন এবং আপৎকালীন ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য অপশনাল ১.২০ লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ৩.৯০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। অন্যদিকে, স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। এতে ব্যয় হবে ২০৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ১০১ টাকা ৮৬ পয়সা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান নাবিল নাবা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৫০ কেজির বস্তায় এই সমুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি মসুর ডালের ক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ১০১ টাকা ৮৬ পয়সা। এর আগে সরকার ১০২ টাকা ৫০ পয়সা কেজি দরে মসুর ডাল ক্রয় করে। বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, 'সারের সরবরাহ আমরা কোনোভাবেই কমতে দেব না। আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মধ্যে মসুর ডাল গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমরা কিনব। বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সার ক্রয় ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মসুর ডাল ক্রয়। আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এর জন্য যা অর্থকড়ি লাগে সেটা ফরেন কারেন্সিতে হোক, আমরা দেব। এটা দ্রম্নতই করতে হবে।' অতীতে দেখা গেছে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অনেক কিছু কেনা হতো। আপনারা কি এটি অব্যাহত রাখবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আজ (বুধবার) আলোচনা হয়নি।