জন্মাষ্টমীতে বন্যার্তদের জন্য প্রার্থনা, পাশে থাকার প্রত্যয়
প্রকাশ | ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
জন্মাষ্টমীতে দেশের বানভাসিদের জন্য করা হয়েছে প্রার্থনা; আর উৎসবের খরচ কমিয়ে সেই অর্থ দুর্গতদের কাছে পাঠানোর প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকাল ৮টায় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
৯টার দিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পালসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা গুরুবরণ করেন।
পরে বাসুদেব ধর বলেন, 'আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম প্রতি বছরের মতো এবারও জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হবে। এরই মধ্যে আকস্মিকভাবে বন্যায় দেশের একটি বিরাট অংশ পস্নাবিত হয়ে গেল, জনগণের একটি বিরাট অংশ অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে পড়ল। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম, পূজার বাইরেও এমন কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে, যেগুলো না করলেও চলে। যেমন অতিরিক্ত আলোকসজ্জা, শোভাযাত্রায় আমরা অনেক কিছু বাদ দিতে পারি, ধর্মীয় আঙ্গিকটা রেখে আমরা করতে পারি। সেই দিক থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই অংশটা আমরা বন্যার্তদের জন্য পাঠিয়ে দেব।'
বাসুদেব বলেন, 'সারাদেশের মানুষকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি, তারাও যেন এভাবে জন্মাষ্টমীর খরচ বাঁচিয়ে বন্যার্তদের জন্য আমাদের এখানে অর্থ পাঠিয়ে দেন। যাতে একটি বড় অ্যামাউন্ট আমরা বন্যার্তদের জন্য ব্যয় করতে পারি। এটা নতুন নয়, জাতীয় যে কোনো দুর্যোগে আমরা এ কাজটা করেছি। '৮৮-এর বন্যা, '৯৮-এর বন্যায় আমরা পূজার খরচ বাঁচিয়ে বন্যার্তদের সহযোগিতা করেছি। সব সময় আমরা জাতীয় দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকি।'
ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার ঘটনায় যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার আশা করেন বাসুদেব ধর।
তিনি বলেন, 'জন্মাষ্টমীর মাধ্যমে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হোক। ক্ষমতার পালাবদলে কারণে আমাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, এটা কেটে যাক, শান্তি ফিরে আসুক। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেন দেশ গড়তে পারি।'
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি সনাতন ধর্মের অবতার হিসেবে প্রেম, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। শ্রীকৃষ্ণ অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ভালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।
বাংলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, দুষ্টের দমন করতে একইভাবে যুগে যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আসেন। এসে সত্য, সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন।
পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় জন্মষ্টমীতে উপবাস পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দিনটিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বেলা ২টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়।
এর আগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।