শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

চট্টগ্রামে কাঁচামরিচের কেজি ১২শ' টাকা

চট্টগ্রাম বু্যরো
  ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রামে কাঁচামরিচের কেজি ১২শ' টাকা

চট্টগ্রামে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে এর দাম প্রতি কেজি ১ হাজার ১০০ টাকা। ফলে এখন আর কেজিতে নয়, ক্রেতারা কাঁচামরিচ কিনেছে ২০ থেকে ৫০ গ্রাম করে। এছাড়া বাজারে অন্যান্য সবজির দামও লাগামহীন ছিল।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফেনী-কুমিলস্নার বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক তলিয়ে গেছে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় বগুড়া, ফরিদপুর, জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামমুখী বহু ট্রাক বাজারের অধিকাংশ সবজি নিয়ে আসেনি। গত তিন দিন হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৬

কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজি বাজারে আসছে না। ফলে বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। এ সুযোগে কয়েকগুণ দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন অসাধু বিক্রেতারা।

রোববার চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়ি, কর্ণফুলী মার্কেট ও রিয়াজুদ্দিন বাজারে কাঁচামরিচ বিক্রি করেছে ১২০০ টাকা করে। এছাড়া রিয়াজুদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

কাঁচাবাজারগুলোর বেশিরভাগ দোকানেই ছিল না কাঁচামরিচ। যেগুলোতে ছিল সেগুলোতে ৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা দাম শুনেই কাঁচামরিচ না কিনে ফিরে গেছে।

নগরের চকবাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা বিশ্বজিৎ যায়যায়দিনকে বলেন, কাঁচামরিচের দাম শুনে রীতিমতো বেঁহুশ হওয়ার দশা আমার। বাজারে এসে কাঁচামরিচের দাম জানতে চাইলে বিক্রেতা বলেন ৬০ টাকা। প্রথমে মনে করছি বিক্রেতা এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম বলেছে। কিন্তু পরে জানতে পারি এক কেজি নয়, ৫০ গ্রাম কাঁচামরিচের দামই ৬০ টাকা চাচ্ছেন। সেজন্য আর কাঁচামরিচ কিনিনি। বাজারে এখন কাঁচামরিচ ছাড়াও প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে গেছে।

এছাড়া বাজারে অন্যান্য সবজি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি বরবটি ১৬০ টাকা, কাকরল ১৬০ টাকা, শসা ১২০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুর ফুল ৮০, চিচিঙ্গিা ১০০ টাকা, তিতা করলা ১২০ টাকা, পটল ৭০, টমেটো ৩০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০, ঝিঙা ১২০, বেগুন ১৪০ টাকা, আলু ৬০ টাকা এবং ঢেঁড়স বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়।

কাজীর দেউরি বাজারের সবজি বিক্রেতা মেহেদি বলেন, বন্যার কারণে সবজির সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজার থেকে যখন সবজি কিনে আনি তখন অনেক সবজি নষ্ট পড়ে। সেগুলো বাছাই করে আমাদের বিক্রি করতে হয়। এতে আমাদের কেজিপ্রতি কেনার খরচও বেড়ে যায়।

বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা, রসুন ২০০-২২০ টাকা ও আদা ২৬০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে পাকিস্তানি পেঁয়াজের কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের ৯৫ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চায়না আদা কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২১০ ও চায়না রসুনের কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা এবং প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির বাদামি ডিম ১৫০-১৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে বন্যায় অনেক গবাদিপশু মারা যাওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যে মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক শিবলী বলেন, চট্টগ্রামে এখন কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সব গাড়ি আটকে আছে। তাছাড়া ওইসব গাড়িতে থাকা সবজিও পচে যাচ্ছে। তবে সবজিবাহী গাড়ি চট্টগ্রামে প্রবেশ শুরু হলে দাম কমবে।

এদিকে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। বস্তাপ্রতি চাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, গত তিন দিনে মাত্র একটা গাড়িতে চাল এসেছে। পুরো বাজারে চালের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ বেড়ে গেলে তখন দাম কমে যাবে। তবে বেচাবিক্রিতেও ভাটা পড়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ জানান, বাজারে সরবরাহ না থাকলেও দাম বাড়তি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে যেহেতু অভিযোগ পাওয়া গেছে, বাজারে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে