রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন।
সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণ, সংবিধান সংশোধনের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির দাবিও জানিয়েছে তারা।
শনিবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এক মানববন্ধন থেকে দাবিগুলো তোলা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার এবং প্রধানমন্ত্রী পদের
মেয়াদ নির্ধারণের দাবিও জানানো হয়।
হত্যা ও সহিংসতায় জড়িতদের দ্রম্নততার সঙ্গে বিচারের আওতায় আনা, আন্দোলনে নিহতদের পরিবারগুলোকে সহায়তা করা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আহতদের সুচিকিৎসাসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থাসহ অন্তর্র্বর্তী সরকারের কাছে ২১টি দাবি জানিয়েছেন সুজন।
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানের মধ্য দিয়ে এখন যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এখন সরকারকে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, হত্যা ও বিভিন্ন অপরাধের যুক্তকারীদের বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।"
অন্তর্র্বর্তী সরকারকে সামনের দিনে বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে বলেও সতর্ক করেন সুজন নির্বাহী সদস্য স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুজন নেতারা বলেছেন, অতীতে ক্ষমতাসীনদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন না করায় তাদের করুণ পরিণতি হয়েছে। তাই এখন দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের মধ্য দিয়ে মানবিক, অসাম্প্রদায়িক, জবাবদিহিমূলক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
ঢাকা ছাড়াও সারাদেশের সব জেলা ও বিভিন্ন উপজেলাতেও এই মানববন্ধন করা হয়।
২১টি দাবির মধ্যে আরও ছিল জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণমুক্ত করা, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, 'না-ভোটে'র বিধান পুনঃপ্রবর্তন করা, নির্দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করা, স্থানীয় সরকারের কর্মকান্ডে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করা, সংরক্ষিত নারী আসন এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা এবং প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করা, 'সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট'-এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিলসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সৎ, যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং বিশেষ ট্রাইবু্যনালে দুর্নীতিবাজদের বিচার করা, তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা, গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা, এবং একটি শোষণহীন মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা।
সুজন সহসম্পাদক জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, হেলপ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি খন্দকার শহীদুল ইসলামও ঢাকার মানববন্ধনে অংশ নেন।