বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

'আমাকে এক প্যাকেট খাবার দেন ভাই'

চাটখিল (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
'আমাকে এক প্যাকেট খাবার দেন ভাই'

'ভাই আমাকে এক প্যাকেট খাবার দেন' বলতে বলতে ত্রাণ বিতরণকর্মীদের দেখে প্রায় কোমরসমান পানি মাড়িয়ে এগিয়ে আসেন ৫০ বছর বয়সি সুফিয়া বেগম (ছদ্মনাম)। নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের করটখিল গ্রামের যেদিকে তাকানো যায় শুধু পানি আর পানি। গ্রামের সড়কের ওপর ৫ ফুটের বেশি পানি। এ এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দি। সরকারের কোনো ত্রাণ সহায়তা এখানে আসেনি। ফলে বানভাসিরা চরম কষ্টে রয়েছেন।

শনিবার দুপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ত্রাণবাহী

নৌকা দেখে ক্ষুধার্ত অসহায় মানুষদের সঙ্গে তিনিও ছুটে এসেছেন এক প্যাকেট খাবারের আশায়।

এদিন বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য, জরুরি প্রয়োজনীয় ওষুধ, মোমবাতিসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেছে অধিকার কর্মী-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন প্রবাসী শাহ্‌ সুফিয়ান ও সমাজসেবক রেহানা জিলানী এবং সদস্যদের বিশেষ চাঁদায় এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক রুবেল হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক তারফিনা শাহনাজ রজব।

এদিন দিনভর সংগঠনের সদস্যরা উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকার অসহায় ও কর্মহীন দরিদ্র পরিবারে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেন। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে আছে চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, মুড়ি, চিনি, চিঁড়া, বিস্কুট, মোমবাতি ও জরুরি ওষুধ।

এদিকে 'ফান্ড ফর রিলিজ' নামক আরেকটি সংগঠন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করেছে। সংগঠনের সদস্য রাহাত গাজী, জিহাদুল ইসলাম জিসান, নাফিস হাসান ভুবন, নিলয়, নাফিস হাসান আপন, জিসান ভুইয়া, মারুপ মাহমুদ, তানবির, রায়হান, মেহেদী, শোভন, আবির তাসিন, শাহাদাত তপদার ও মাহবুবুর রহমান মেজবা ঘরে-ঘরে গিয়ে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আশ্রয় কেন্দ্রে-কেন্দ্রে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করছে।

চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন জানান, উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর দুর্যোগকালীন কার্যক্রমে তিনি মুগ্ধ। স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে রাত-দিন বন্যার্তদের সহযোগিতা করে আসছে।

ইউএনও আরও বলেন, সরকারিভাবে যেসব ত্রাণ সহায়তা এসেছে এগুলো বেশিরভাগই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দেওয়া হয়েছে। তবুও বেশি সমস্যায় থাকা এলাকায় জরুরিভাবে খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।'

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, 'জেলার ৯ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যায় তলিয়ে গেছে। ১৯ লাখ ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ১১৫ জন আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দি এলাকায় খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও চিকিৎসাসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে