নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান মির্জা ফখরুলের

প্রকাশ | ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদের মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -ফোকাস বাংলা
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অতিদ্রম্নত সংলাপ চান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, জনগণের চাহিদা পূরণ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে একটা নির্বাচন দ্রম্নত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায় সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করবে এমনি প্রত্যাশা সবার। শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভা থেকে বিএনপি মহাসচিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের নবম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট তিনি মারা যান। প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের প্রতি তার অঙ্গীকারের নানা কথা তুলে ধরে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। তারা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এই সরকারের ওপর আস্থা রয়েছে, জনগণের আস্থা রয়েছে, সকলেরই আস্থা আছে। কিন্তু অবশ্যই সেটা (নির্বাচন অনুষ্ঠান) সীমিত সময়ের মধ্যেই করতে হবে, একটা সময়ের মধ্যে করতে হবে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই করতে হবে। তা না হলে যে উদ্দেশ্যে সেই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ব্যাহত হবে।' ফখরুল বলেন, 'সংস্কারের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেটা কীভাবে আসবে? সেটা আসবে একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেটা আসতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং কয়েকজন ব্যক্তি একটা সংস্কার করে দিলেন এটা না। জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেই সংস্কার আসতে হবে।' মির্জা ফখরুল বলেন, 'সরকারে যারা কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও ভিজিয়েবল দেখতে চাই, আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই। আমরা দেখতে চাই যে, প্রধান উপদেষ্টা অতিদ্রম্নত জনগণের সামনে তিনি কি করতে চান তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন যে, কীভাবে তিনি অতিদ্রম্নত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কীভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ঘটিয়ে জনগণকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ?এগুবেন নির্বাচন করার জন্য।' মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত এই সরকারের সত্যিকার অর্থে কোনো এজেন্ডা ভিত্তিক কোনো আলোচনা হয়নি। রাজনীতি ছাড়া তো এটা হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত তো আনতে হবে। বিগত সরকারের দোসর সচিবদের সরানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'যে সমস্ত ব্যক্তিরা হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর) পাশে থেকে, তার সঙ্গে থেকে, তার দোসর হয়ে তারা মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন, লুটপাট করেছেন, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদেরকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশপাশে দেখতে চাই না। পত্রিকায় যখন ছবি দেখি যে, এই সমস্ত লোক আবার সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করছেন তখন আমরা উদ্বিগ্ন হই। খুব চিন্তিত হই যে, আজকে ১৬/১৭ দিন হয়েছে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত সেক্রেটারিরা ওই সরকারকে এতদিন ধরে চালিয়েছে, তাদের সমস্ত কুবুদ্ধিগুলো দিয়েছে তারা এখনো এই সরকারের সচিবের দায়িত্ব পালন করছে। আমরা দেখতে চাই যে, অবিলম্বে এই বুরোক্রেসিতে যারা প্রো-পিপল আছেন, যারা জনগণের সফঙ্গ সম্পৃক্ত আছেন সেই আইন মেনে তাদেরকে এই সরকারের পাশে দেখতে চাই। একথাগুলো আমরা বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি এজন্য যে, আমরা সেগুলো দেখতে পারছি না।' তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস চ্যান্সলররা রিজাইন করেছেন। আমরা দেখতে চাই যে, ভাইস চ্যান্সলর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে যাদের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমরা দেখতে চাই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেতন। এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বাত্মক সহোযোগিতা দিয়েছি, দেব। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপির নূর মোহাস্মদ খান, জহির উদ্দিন স্বপন, নজমুল হক নান্নু, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উলস্নাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।