রংপুরে ডিপোর তেল বিক্রির ভাগ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে ডিপোর জ্বালানি তেল কালোবাজারে বিক্রির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নগরীতে বিবাদমান খেরবাড়ী ও মুসলিমপাড়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর হয়েছে রেলওয়ে স্টেশন ভবনের গস্নাস, সিসি ক্যামেরা ও আসবাবপত্র। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে এই ঘটনা ঘটে। ফের সংঘর্ষ হতে পারে এমন আশঙ্কায় রয়েছেন রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যাত্রীরা। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেলওয়ে স্টেশনের পাশে রয়েছে- জ্বালানি তেলের ডিপো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা। ওই ডিপোগুলো থেকে প্রতিদিন ট্যাঙ্কলরিতে করে বিভিন্ন স্থানে তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। লরি চালকের মাধ্যমে ট্যাঙ্কলরিতে থাকা প্রতিদিন কালোবাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে কালোবাজারে তেল বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল নগরীর শেখপাড়ার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মুসলিমপাড়ার সুযোগসন্ধানীরা কালোবাজারে বিক্রির তেলের ভাগ চাইতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কালোবাজারে বিক্রির ভাগ চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ৫ আগস্ট থেকে ডিপোগুলো থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে ৬ আগস্ট থেকে বিবদমান ওই দুই এলাকার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সবশেষ বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এনিয়ে তিন দফা সংঘর্ষ হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এদিকে, নগরীর খেরবাড়ী ও মুসলিমপাড়ার মাঝখানে রয়েছে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের পস্ন্যাটফর্ম। রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে সেখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ওই এলাকায় রয়েছে মুসলিমপাড়া ও খেরবাড়ী এলাকার লোকজনের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দুই এলাকার মধ্যবর্তীস্থান হওয়ায় রেলওয়ে স্টেশনটি ঘটনাস্থলে পরিণত হচ্ছে। বৃহস্পবিারও রেলওয়ে স্টেশন পস্ন্যাটফর্মে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রেল ভবনের ৪টি গস্নাস, ২টি সিসি ক্যামেরা ও ১০ থেকে ১২টি বসার চেয়ার ভাঙচুর হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। গুরুতর আহতদের ভর্তি করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনা এবং মহানগর কোতোয়ালি ও তাজহাট থানার পুলিশ বাহিনী সদস্যরা। রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেট শঙ্কর গাঙ্গুলি জানান, সংঘর্ষের সময় যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শ্যামপুর ও মিরবাগের দুটি ট্রেন দাঁড়িয়ে রাখা হয়েছিল। সংঘর্ষ শেষ হওয়ার পর ট্রেন দুটি রংপুর রেল স্টেশনের প্রবেশ করে। ফলে যাত্রীরা আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পায়। রংপুর রেলওয়ে স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সাইফুদ্দিন জানান, কয়েক দফা বিষয়টি মীমাংসার জন্য দুই পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বসা হয়েছিল। কিন্তু খেরবাড়ীর লোকজন তা মানেননি। মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শাহআলম বলেন, মূলত কালোবাজারে বিক্রির ডিপোর জ্বালানি তেলের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি। দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসার জন্য বসা হয়েছে। তাজহাট থানার ওসি হোসেন আলী জানান, রেলওয়ে স্টেশনকে কেন্দ্র করে একটি অপরাধ চক্র গড়ে উঠেছে। তাদের দমনে রেলওয়ে পুলিশের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।