ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ.বি তাজুল ইসলামকে ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন হত্যা মামলায় ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ.বি তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমানের আদালতে হাজির করে। বিজ্ঞ আদালত ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ.বি তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ক্যাপ্টেন অব. তাজুল ইসলামকে রাজধানীর গুলশানের
নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর বিএনপির কুমিলস্না বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করতে ১৯ নভেম্বর বিকালে বাঞ্ছারামপুর থানা এলাকায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ হামলা করলে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন গুলিবিদ্ধ হন। নয়নকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে রাস্তায় তিনি অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।
এ ঘটনায় ২০ নভেম্বর এই ঘটনায় পুলিশের এসআই আফজাল হোসেন বাদী হয়ে হত্যা, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও সরকারি সম্পদের ক্ষতির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় ১৭ জন বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নাম উলেস্নখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। সেই মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক এমপি ক্যাপ্টেন অব. এ.বি তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে এই ঘটনায় নিহত নয়নের বাবা রহমত উলস্নাহ বাদী হয়ে কনস্টেবল বিশ্বজিৎকে প্রধান আসামি করে এসপি আনিসুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমসহ আটজনের নাম উলেস্নখ করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলা খারিজ করে দেন আদালত।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম খান বলেন, নয়ন হত্যা মামলায় তাজুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে। সেসময় আমরা থানায় মামলা দিলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। আদালতে পুলিশসহ ৬০ জনের বেশি আসামি করে মামলা দিলেও তা খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু পুলিশের করা মামলায় আদালত তার ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আমি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সঙ্গীয় ফোস নিয়ে তাকে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে এসেছি।