বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চট্টগ্রামে আদালতের এজলাস থেকে সরানো হলো লোহার খাঁচা

চট্টগ্রাম বু্যরো
  ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রামে আদালতের এজলাস থেকে সরানো হলো লোহার খাঁচা

চট্টগ্রামের সবগুলো আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের জন্য রাখা লোহার খাঁচা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই পরিবর্তনের ফলে আসামিরা এখন আর খাঁচার মধ্যে আবদ্ধ থাকবেন না, বরং বাদী ও সাক্ষীর মতোই মুক্তভাবে এজলাসে দাঁড়াতে পারবেন।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি আদালতে গিয়ে দেখা যায়, আসামিদের রাখা লোহার খাঁচা আগের মতো নেই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম), সিজেএম, মহানগর দায়রা জজ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ চট্টগ্রামের সবগুলো আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের রাখা লোহার খাঁচা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খাঁচার মতো দেখতে লোহার গ্রিল বের করে ফেলা হয়েছে। রয়েছে শুধু বুক পরিমাণ সমান একটি গ্রিল। বাকি অংশ খোলা অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে, আইনজীবীরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, লোহার খাঁচার মধ্যে আসামি রাখা অমানবিক ও সংবিধান পরিপন্থি। সভ্য দেশে লোহার খাঁচা থাকতে পারে না। সংবিধানে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানষিক বা লাঞ্ছনাকর দন্ড দেওয়া যাবে না কিংবা কারও সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না। দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আদালতের এজলাস কক্ষে আসামিদের রাখা লোহার খাঁচা বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। আসামির সঙ্গে সব রকম নিষ্ঠুরতা বা লাঞ্ছনাকর ব্যবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান আইনজীবীরা।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, খাঁচা অপসারণের ফলে আসামিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে এবং মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আসামিীদর প্রতি সব ধরনের অমানবিক ও যন্ত্রণাদায়ক ব্যবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

উলেস্নখ্য, এর আগে দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আদালতে আসামিীদর খাঁচায় রাখার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। ওই সময় আদালত অঙ্গনে সাংবাদিকদের ড. ইউনূস বলেন, লোহার খাঁচার তৈরি আসামির কাঠগড়া আদালত থেকে তুলে নেওয়া উচিত। আদালতে খাঁচার বিষয়টা আমি বারে বারে বলতে থাকব। এটা জাতির প্রতি একটা বড় অপমান। এ অপমান আমাদের সহ্য করা উচিত না। বিচার বিভাগের প্রতি আবেদন জানাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাঁচাগুলো সরিয়ে ফেলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে