চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে ঢাকার ক্রেতাদের ভিড়

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে ইলিশ বেচাকেনায় ব্যস্ত বিক্রেতা ও ক্রেতারা -সংগৃহীত
চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। সরগরম হয়ে উঠেছে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার বড় স্টেশন মাছঘাট। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মণ ইলিশ বেচাকেনা চলছে। তবে সারাদেশে চাঁদপুরের ইলিশের ব্যাপক চাহিদার অনুপাতে বাজারে মাছটির আমদানি কম, যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও নিচে। এ কারণে ইলিশের দাম এখনো তুলনামূলকভাবে চড়া বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও জেলেরা। রোববার দুপুরে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা যায়, ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি আকারের পদ্মা-মেঘনার (চাঁদপুরের) তাজা ইলিশ বেচাকেনা চলছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার সাড়ে ৭০০ টাকা দরে। এর চেয়ে বড় ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম হাঁকা হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আর নোয়াখালীর হাতিয়া বা সাগর অঞ্চলের ইলিশের বেচাকেনা চলছে এর চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমে। রাজধানী ঢাকার বারিধারা থেকে সেখানে ইলিশ কিনতে যান জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, এক কেজির বেশি ওজনের ১০টি চাঁদপুরের তাজা ইলিশ কেনেন ২০ হাজার ৩০০ টাকায়। ঘাটটিতে রোববার তুলনামূলকভাবে ইলিশের আমদানি বেশি বলে দাবি করেন মাছ বিক্রেতা আলাউদ্দিন। তার মতে, এ জন্য দামও ছিল কিছুটা কম। তবে মাছ অনুপাতে ক্রেতা বেশি। আর বেশির ভাগ ক্রেতাই ঢাকার। এদিকে ইলিশের এই ভরা মৌসুমে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীর ছত্রচ্ছায়ায় ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে ইলিশ বিক্রির লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে খোদ জেলা ও পুলিশ প্রশাসন বাধ্য হয়ে অনলাইন ক্রেতাদের সতর্ক করে নোটিশ জারি করেছে। সেই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। ঢাকার কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী বায়েজিদ জুয়েল বলেন, ''গত ১৭ আগস্ট চাঁদপুর মাছঘাটের কথিত এক ইলিশ ব্যবসায়ী মাছের ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে 'চাঁদপুর ইলিশ ঘাট' নামের একটি অনলাইন পেজ থেকে ক্যাশঅন ডেলিভারির কথা বলে ৫০০ টাকা বিকাশ করতে বলেন। পরে আমি ওই টাকা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর মাছ রেডি আছে জানিয়ে আরও কিছু টাকা পাঠাতে বলেন। তাদের চাহিদামতো বিকাশে অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু তিনি ইলিশ পাঠাননি।'' একই রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন গুলশানের বাসিন্দা নাসরিন জাহান। তার কাছ থেকেও প্রতারক চক্র গত সপ্তাহে ইলিশ পাঠানোর কথা বলে ৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইলিশ বিক্রেতাদের কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, প্রতারকরা তাদের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে প্রতারণা করছে। তারা চান, এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এসব অভিযোগের ব্যাপারে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতি সতর্ক অবস্থায় আছে বলে জানান সভাপতি আবদুল বারি মানিক জমাদার। তিনি বলেন, 'আমরা তিন বছর ধরে চাহিদা মোতাবেক ইলিশ পাচ্ছি না। এ জন্য ইলিশের দামও কমছে না। এ বছর গত বছরের তুলনায় অর্ধেকও মাছ পাচ্ছি না। তবে এ বছর অন্তর্র্বর্তী সরকারের নির্দেশে রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় সাধারণ ক্রেতারা কিছুটা হলেও ইলিশের স্বাদ নিতে পারছেন। কিন্তু এবার ইলিশ নিয়ে প্রতারণা বেড়ে গেছে। আমরা প্রতিদিন অসংখ্য অভিযোগ পাচ্ছি।' জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে জানিয়ে আবদুল বারি বলেন, 'আমরা বলব যারা ইলিশ কিনতে চান; তারা যেন চাঁদপুরে এসে অথবা আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেনেন। তাহলে আর প্রতারণার শিকার হবেন না।'