সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকার পাশে ট্রাক-প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- রাজশাহী জেলার বাগমারা থানার নরসিংহপুর গ্রামের জসিমুদ্দিন (৬৪), স্ত্রী নার্গিস খাতুন (৪৬), ছেলে জামাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন। এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন প্রাইভেটকার চালক। সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের হাটিকুমরুল মৎস্য আড়তের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, জসিম উদ্দিনের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। গত শনিবার একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে তাকে সেখানে নেওয়া হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তান। চিকিৎসা শেষে ওই মাইক্রোবাসে করেই গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন তারা। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি রোববার রাত ৩টার দিকে হাটিকুমরুল এলাকার গোলচত্বরে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের ওই চার যাত্রী নিহত হন। এ ছাড়া চালক গুরুতর আহত হন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উলস্নাপাড়া কার্যালয়ের স্টেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গুরুতর আহত চালককে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হবে।
খবর পেয়ে থানা থেকে লাশগুলো গ্রহণ করেন স্বজনরা। সোমবার দুপুরে গ্রামটিতে গিয়ে আত্মীয়স্বজন ও এলাকার লোকজনকে বিলাপ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় কবরস্থানে বিকালে জানাজার নামাজ শেষে তাদের লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে, একই পরিবারের চারজনের এমন মৃতু্যতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দা ও ভবানীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর ওই পরিবারে জামালের (জসিম উদ্দিনের ছেলে) স্ত্রী ও শিশুকন্যা ছাড়া আর কেউ থাকল না।
আবুল হোসেন নামের এক প্রতিবেশী বলেন, জসিম অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সন্তানরা এলাকায় চিকিৎসা করিয়েছেন। তারা চেয়েছিলেন বাবাকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলবেন। তবে তা আর হলো না। একসঙ্গে চলে যেতে হলো গোটা পরিবারকে।