জিয়ার মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল

ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাতের চেষ্টা চলছে

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য কিছু ব্যক্তি ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত করছেন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এসব ব্যক্তি বিভিন্ন গোলযোগ সৃষ্টি করে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপর অন্যায়ভাবে তা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী এ ধরনের কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। উপরন্তু আমরা চেষ্টা করছি, যে গোলযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলোকে বন্ধ করার জন্য।' সোমবার সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপির নেতাকর্মী। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চাই। চাই একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। সাম্য, মানবিক অধিকার, ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠিত করে আমরা নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চাই।' শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়কে সুসংগঠিত করবে বিএনপি উলেস্নখ করেন দলটির মহাসচিব। দলের নেতাকর্মী ও দলকে আরও সুদৃঢ় করতে ইতোমধ্যে বিএনপি কাজ শুরু করেছে বলেও জানান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, 'খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন। অন্য নেতা, যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বন্দি হয়েছিলেন, তাদের কিছু মুক্তি হয়েছেন, কিছু বাকি আছেন। সব মুক্তির জন্য আমরা ব্যবস্থা করছি।' ফখরুল বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছি। আজকে আমরা শপথ নিয়েছি, ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সে বিজয়কে আমরা স্বস্তির হতে দেব। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয়সহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা ছিলেন। ইইউ'র ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক :এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বার্নড স্পানিয়ের। সোমবার সকালে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি স্থায়ী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটি সদস্য শামা ওবায়েদ ছিলেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, 'বাংলাদেশে পটপরিবর্তনের পর আগামী দিনের বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে; অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকভাবে সবকিছু মিলিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কীভাবে, কোথায় কোথায় সমর্থন দিতে পারে, বাংলাদেশ যে একটি গর্তের মধ্যে পড়েছে এর থেকে বের হওয়ার জন্য কোন দিকগুলোয় সমর্থন দিলে ভালো হয় এ নিয়ে আলোচনা হয়।' তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং গুড গর্ভনেন্স প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব ধ্বংস হয়ে গেছে এগুলোর প্রতিকার কী এবং কিভাবে এগুলোকে আবারও সঠিক জায়গায় নিয়ে আসা যায়। এখানে তাদের কি সহযোগিতা থাকতে পারে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে করে আমাদের বড় একটি অংশ ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি করে সেগুলো কিভাবে অব্যাহত রাখা যায় এবং সে ক্ষেত্রে তাদের কি করা উচিত এখানে। বাংলাদেশকে আর্থিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নে তাদের সঙ্গে আমাদের একটা ফ্রেমওয়ার্ক আছে, সেই আর্থিক বিষয় কিভাবে রিফর্ম বা সংস্কারগুলো কিভাবে করা যায় যাতে তাড়াতাড়ি আমরা অর্থনৈতিকভাবে সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারি। মূলত এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে আগামী দিনে আমরা কিভাবে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসতে পারি। আমির খসরু বলেন, নির্বাচন ব্যতীত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই। স্বাভাবিকভাবেই সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রে আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চান কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত তো অবশ্যই চাই। শুধু স্পেসিফিক এ বিষয়ে নয়, কিন্তু এত টাকা যে বিদেশে পাচার হয়েছে, ১০০ বিলিয়নের ওপর বিভিন্ন সোর্স থেকে যা বলা হচ্ছে এই টাকাগুলো বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সাজেস্ট করেছি সবাই মিলে এ বিষয়ের ওপর কাজ করতে হবে।