চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এমএ লতিফকে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে লতিফকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) হুমায়ুন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে সাবেক সংসদ সদস্য এমএ লতিফকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাকে ডবলমুরিং থানায় বিস্ফোরক ও মারামারির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাটি করেছেন বাকলিয়া থানাধীন বৌবাজার এলাকার মো. এরশাদ নামে এক ব্যক্তি। এই মামলায় গ্রেপ্তার এমএ লতিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডবলমুরিং থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার নিউমার্কেট থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশ থেকে যাওয়ার পথে নগরের ডবলমুরিং থানার ধনিয়ালাপাড়া ছোট মসজিদে সামনে এমএ লতিফের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাদী মো. এরশাদসহ তাদের সঙ্গীদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় এরশাদ গত শুক্রবার নগরের ডবলমুরিং থানায় এমএ লতিফসহ ১৬ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় এমএ লতিফ গুলি করার হুকুম দেন বলে অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি হলেন- চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
মামলার বাদী এরশাদ অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরসহ বাকি আসামিরা তাকে ও তার সঙ্গে থাকা অন্যদের রড-হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ওই সময় তারা ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটান।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী বলেন, শনিবার ভোর
সাড়ে ৬টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মাজার গেট এলাকা থেকে এমএ লতিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষ আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের মাদারবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে সাবেক এমএ লতিফের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয় জনতা সেই বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলে। ওই সময় অনেকে লতিফকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগানও দেন। ক্ষুব্ধ জনতা তাদের হাতে লতিফকে তুলে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমএ লতিফের অনুসারী কিছু লোক ক্ষুব্ধ জনতার ওপর হামলার চেষ্টা করলেও পরে তারা পালিয়ে যায়। লতিফও ওই সময় একদফা পালানোর চেষ্টা করেন। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে খবর পেয়ে সেনাসদস্যদের একটি দল মাদারবাড়ির ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে সরিয়ে লতিফকে তাদের হেফাজতে নেয়।
উলেস্নখ্য, এমএ লতিফ আওয়ামী লীগের হয়ে চট্টগ্রাম-১১ আসনে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এক সময় চট্টগ্রাম চেম্বারেরও সভাপতি ছিলেন তিনি।