সীমান্তে পিঠ দেখাবেন না বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

'আওয়ামী লীগ' নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
'দেশের সীমান্তে ঢুকে মানুষ মারলেও পতাকা বৈঠক করে বলা হতো সব ঠিক হয়ে গেছে'- এ কথা উলেস্নখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, 'সেই দিন শেষ হয়ে গেছে।' তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উদ্দেশে বলেছেন, 'বিজিবির মতো একটা ফোর্সকে (বাহিনী) পিঠ দেখাতে বলেছে সীমান্তে। সীমান্তে আমাদের লোক মারে, বিজিবি পতাকা বৈঠক করতে বাধ্য হয়। আমি বলেছি যে, পিঠ দেখাবেন না। এনাফ ইজ এনাফ (যথেষ্ট হয়েছে)।' মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আহত বিজিবি সদস্যদের দেখতে গিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন। এদিন পিলখানায় বিজিবি হাসপাতালে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেখানে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার বিষয়েও খোঁজখবর নেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের সীমানার মধ্যে ঢুকে মারে, আর আমরা বলি, পতাকা বৈঠক করেছে, সব ঠিক হয়ে গেছে বা আমি জানি না। দ্যাট ডেজ আর ওভার (সেসব দিন শেষ হয়ে গেছে)।' দেশের বিভিন্ন বাহিনীকে দানব বানানো হয়েছে মন্তব্য করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, '১৫ বছর এই ফোর্সগুলোকে দানব বানিয়েছে। যারা বানিয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। তারা কত লোক মেরেছে। প্রত্যেকটি ইনস্টিটিউশন ধ্বংস করেছে। এগুলো ন্যাশনাল ফোর্স (বাহিনী), কারও পারসোনাল (ব্যক্তিগত) ফোর্স নয়।' পুলিশ বাহিনী প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। এখানে (পিলখানা) আসার সময়ও দেখলাম, পুলিশের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করছে। পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। পুলিশকে দানব বানানো হয়েছে। যারা এটি করেছে তাদের আমরা ভুলে যাব না। অবশ্যই হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ১ বিচার করা হবে।' তিনি বলেন, 'একটু সবুর করেন, কতগুলো প্রক্রিয়া আছে। সরকারি অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নিতে গেলে অনেকগুলো প্রসেস (প্রক্রিয়া) আছে। যেগুলো টপাটপ করা যায় না। সুতরাং, ধৈর্য ধরতে হবে।' অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'অস্ত্র ফেরত দিতে বলেছি। যদি জমা না দিয়ে ধরা পড়েন, তাহলে দুই রকমের শাস্তি পাবেন। নিষিদ্ধ অস্ত্র ছিনতাই এবং নিষিদ্ধ অস্ত্র পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন। সুতরাং, নিজেরা ভয়ে আসতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে জমা দেন।' পুলিশের পোশাক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা যত দ্রম্নত সম্ভব ইউনিফর্ম চেঞ্জ (পোশাক পরিবর্তন) করতে চাই।' তিনি বলেন, 'ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয়, সে জন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছি।' 'আওয়ামী লীগ' নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অন্তর্র্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'অনেক কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনো কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত।' সোমবার সচিবালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, দয়া করে আপনারা দেশকে অরাজকতার মধ্যে ঠেলবেন না, ইনক্লুডিং সদ্য বিদায় হওয়া পার্টি (আওয়ামী লীগ)। আপনারা পার্টি গোছান। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপনাদের সাহায্য করব। ?আপনারা পার্টি গোছান উইথ নিউ ফেস (নতুন মুখ নিয়ে), উইথ নিউ অঙ্গীকার এবং আশা করি, উইথ থ্রম্ন পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট (রাজনৈতিক আইনের মধ্য দিয়ে)। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমি ছাত্রদের উদ্দেশে বলব- তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ আছে।'