শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘষ

র্ মৌলভীবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্হত মৌলভীবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার/রাজনগর প্রতিনিধি
  ১০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
র্ মৌলভীবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্হত মৌলভীবাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নিহত

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার 'মধুর দোকান' বাজারে দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা (৫০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত চেয়ারম্যান ছানা পাঁচগাঁও ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আ'লীগের সদস্য বলে জানা গেছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়ে দুপুর ২টায় গিয়ে শেষ হয়। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি আ'লীগ সরকারের পতনের পর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারের মহেশ দাসের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা চলছিল। শুক্রবার সকালে মধুর বাজারে লুটকারীদের সঙ্গে স্থানীয় আ'লীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার ভাই ছুনু মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি উভয়পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে সংঘর্ষটি এলাকাভিত্তিক রূপ নিয়ে রক্তাগাঁও ও কেওলা গ্রামের লোকজন একে অপরের মুখোমুখি হয়। রক্তা গ্রামের বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতানের নেতৃত্বে ও কেওলা গ্রামের আ'লীগ নেতা দেওয়ান মিয়ার নেতৃত্বে মধুর বাজারে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে উভয়পক্ষের শতাধিক লোকজন গুলিবিদ্ধ ও ইটপাটকেলে আহত হন। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন সিরাজুল ইসলাম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ও রাজনগরের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এদিকে চেয়ারম্যান নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন- আতিক (১৮), মহেষ দাস (৬০), রুহিত দাস (২২), লিটন দাস (২৩), অজিত দাস (২৬), হিমাংশু দাস (২৫), সুমন দাশ (২৫), সঞ্জিত দাস (৪৫), তারা মিয়া (৪২), দুরুদ মিয়া (৩০), মোক্তার মিয়া (৫৮), শাহজাহান (৩২), আওলাদ হোসেন (৫০), ফয়ছল আহমদ (২৯), সুলতান (৩২), আফান মিয়া (৩৫), বিপস্নব দাস (২৮), শহীদ মিয়া (৫০), লোকমান (৩৫), লিপুন মিয়া (৩৫), আজমল আলী (৫৫), লায়েক (৩৫), জিকু (২৬), জিলু (২৮), ভুট্টু (২৫), সোহেল (২৫), পাভেল (২২), মিনত (৫৫), দিলাবত (৩০), ইয়াবর (৩৬), নুরুল আমিন (২৮), তারিস আহমদ (৬০), জিতু (৬০), এরশাদ (৬০), দুলু মিয়া (৫০), কুনাই মিয়া (৫৫), আলম মিয়া (২৬), হুসাইন (২০), ইসলাম মিয়া (২০), নুরুল ইসলাম (২০), মাহিদ (১৫), মিন্টু (১৬), নাঈম (১৮), সুহেলসহ (২০) উভয়পক্ষের প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের রাজনগর, মৌলভীবাজার ও সিলেটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

নিহত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের চাচাতো ভাই দেওয়ান মিয়া বলেন, আমার ভাইকে বিএনপি নেতা পিন্টু সুলতান গুলি করে মেরে ফেলেছে। তারা আমাদের সব দোকান লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

অপরপক্ষের পিন্টু সুলতান বলেন, আমি আমার আইস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় সারমপুর ও কেওলার লোকজন বাজারে হামলা চালায়। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করি।

সেনাবাহিনীর মৌলভীবাজার ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার হেলাল উদ্দিন বলেন, দুইপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ধারালো অস্ত্র, ইট-পাটকেল ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, চেয়ারম্যানের মৃতু্যর খবর পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে