গণ আন্দোলনের তোপে শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর তার আমলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের পদত্যাগের দাবিতে কর্মচারীদের আন্দোলন গড়িয়েছে দ্বিতীয় দিনে।
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে 'বৈষম্য নিরসনে' প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রেষণে এনবিআরে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি তুলেছেন সংস্থাটির দশম থেকে বিংশতম গ্রেডের কর্মচারীরা।
বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে এনবিআর ভবনের সামনে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের 'বঞ্চিত' কর্মচারীরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর 'অবৈধ কাজের কূটকৌশলের সহযোগী' আখ্যা দিয়ে তারা বিভিন্ন সেস্নাগান দেন।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানাভাবে ভীতি প্রদর্শন, নিয়োগে অনিয়ম, বদলি-পদায়ন ও পদোন্নতি বাণিজ্য, অবসরকালীন সুবিধা বঞ্চিত করা, পাচার ও লুণ্ঠনে সহায়তা করাসহ নানা অভিযোগের কথা বলছেন কর্মচারীরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি এনবিআর ভবনে প্রবেশ করে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এনবিআরের কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশ বর্তমানে একটি জটিল পরিস্থিতি পার করছে। এ মুহূর্তে কোনো ধরনের আন্দোলন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে।
সেনা সদস্যরা আন্দোলনকারীদের যাবতীয় দাবি লিখিতভাবে তাদের কাছে দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং তা 'যথাস্থানে' পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
আন্দোলনকারীরা তাতেও আশ্বস্ত হতে পারেননি। পরে কর অঞ্চল-৬ এর কমিশনার লুৎফুল আজিম উপস্থিত কর্মীদের শান্ত হতে বললে স্থান ত্যাগ করেন তারা।
বিক্ষোভ চলাকালে কর্মচারীদের পক্ষে অনেকেই বক্তব্য দেন। তারা বলেন, সরকারের 'বিভিন্ন অসাধু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন', দলীয় ব্যক্তি দেখে রাষ্ট্রীয় করছাড়ের সুবিধা দেওয়া ও কথায় কথায় নিজে ও তার সহযোগীদের মাধ্যমে হুমকি ও ভয় দেখানোর কাজ করতেন চেয়ারম্যান। আর তার এই কাজে সহযোগিতা করতেন কর প্রশাসনের প্রথম সচিব মো. শাহিদুজ্জামান, শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসনের প্রথম সচিব ঈদতাজুল ইসলাম ও সাবেক বোর্ড প্রশাসনের প্রথম সচিব গাউসুল আযম।
এনবিআর চেয়ারম্যানের পাশাপাশি তার এই সহযোগীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণসহ মোট নয় দফা দাবি তুলে ধরেন কর্মচারীরা।