বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে 'দেখামাত্র গুলির নির্দেশ' দেওয়া এবং আইনবহির্ভূত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ জানিয়ে নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানিয়েছেন।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।
ড. কামাল হোসেন অরাজনৈতিক এ আন্দোলনকালে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ অনেক শান্তিপ্রিয় নাগরিক নিহত, হাজার হাজার মানুষ আহত ও গণগ্রেপ্তার, গণনির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হত্যা, নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক জড়িতদের শান্তির দাবি করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে বিপুল সংখ্যক ছাত্র ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ও গুরুতর আহত করা দেশে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার পরিপন্থি ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, এ আন্দোলন চলাকালে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে মনে রাখতে হবে মানুষের প্রাণের মূল্য দুনিয়ার সব সম্পদ বা স্থাপনার চেয়েও অনেক বেশি। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব প্রাণহানি ও নাশকতার জন্য যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এ অজুহাতে ভিন্নমতের কাউকে দমন-পীড়ন বা সাধারণ মানুষকে হয়রানি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে ড. কামাল হোসেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ, সারাদেশের সব আটক ছাত্র-জনতার মুক্তিসহ অবিলম্বে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।