ধৈর্যের 'শেষ সীমায়' আ'লীগ প্রতিহত করতে হবে : নানক
প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ধৈর্যের শেষ সীমায় আওয়ামী লীগ পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেছেন, ধৈর্য ধরা মানে দুর্বলতা নয়।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী অসহযোগ ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিনে রোববার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৮৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিগোষ্ঠী যে অরাজকতা করছে, তা প্রতিহত করতে হবে। এ জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে দলের পক্ষ হয়ে সংবাদ সম্মেলন কিংবা ব্রিফিং করে আসছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে আজ প্রথম সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ব্রিফিং করেন।
সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ছাত্র সমাজের নয়, উলেস্নখ করে নানক বলেন, সরকার পতনের এক দফা দাবি ক্ষমতা-লিপ্সু বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রকারীদের। আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহলস্নায় কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সব হত্যা, সহিংসতার দায় আন্দোলনকারী নেতৃত্বকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, 'দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবেন না, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।'
\হরোববার যারা সহিংসতা করেছে, তারা শিক্ষার্থী নয়, বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্র শিবির ও জঙ্গি গোষ্ঠীর ক্যাডার বাহিনী, দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, 'আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাই এই সন্ত্রাসীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন। যারা রাস্তায় আছে, তাদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।'
ছাত্র সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'ছাত্র সমাজের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সরকার তাদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। কিন্তু ছাত্র সমাজের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশের কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-আপামর জনগণ মেনে নেবে না।'
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, 'আমরা শেষ কথা বলতে চাই, বিএনপি-জামায়াত, শিবির-জঙ্গি গোষ্ঠী নির্দেশে আমরা এই দেশ মাতৃকাকে ভালোবেসে ধৈর্যের শেষ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। ধৈর্য, সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।'
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, 'কোটা নিয়ে আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদের ধৈর্য ধারণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বারবার আহ্বান জানান। পরে সরকারের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন এবং কোটা নিয়ে ছাত্র সমাজের দাবি ছিল, তার চেয়েও বেশি পূরণ হয়।'
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হওয়ার পরও বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্র শিবির সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালিয়েছে উলেস্নখ করে নানক বলেন, 'গণতন্ত্র, সংবিধান ও জান-মালের নিরাপত্তার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনারা দেখেছেন, আজ সকালে এই সন্ত্রাসীরা বিনা কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালকেও রেহাই দেয়নি। তারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। হাসপাতালে মানবতাবিরোধী এই হামলা দিয়েই প্রমাণিত হয়, তারা শিক্ষার্থী নয়। আজকে যারা সহিংসতা করেছে তারা শিক্ষার্থী না।'
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।