'জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন, কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়' মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, 'সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফেরত যেতে হবে।'
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, 'জামায়াত তো একাত্তর সাল থেকেই নিষিদ্ধ। ১৬ ডিসেম্বর থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেমন নিষিদ্ধ, জামায়াতে ইসলামীও নিষিদ্ধ সংগঠন। আত্মসমর্পণ দলিলে এটা লেখা আছে। কথা এটা নয়, কথা হলো- সাম্প্রদায়িকতাকে সরকার মদত দেবে, নাকি দেবে না? সংবিধানে একটা বিধান ছিল- ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল করা যাবে না। জিয়াউর রহমান এটা বদলিয়ে দিয়েছেন। সেই পরিবর্তিত ভার্সনটাই আরেকটু ঘষামাজা করে আওয়ামী লীগ বহাল রেখেছে। কে বেশি ইসলাম পছন্দ কওে, এটা নিয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগ প্রতিযোগিতা করছে। জামায়াতসহ এসব সাম্প্রদায়িক শক্তি একবার আওয়ামী লীগের কাঁধে বন্দুক রাখে আবার বিএনপির কাঁধে বন্দুক রাখে। এভাবেই তারা তাদের ষড়যন্ত্র কার্যকর করছে। সমস্যা এখানেই।'
সিপিবির সাবেক সভাপতি বলেন, 'ওদের (বিএনপি ও আওয়ামী লীগ) ওপর নির্ভর করে এই বিপদ মোকাবিলা করা যাবে না। একটা সাংস্কৃতিক বিপস্নব, মতাদর্শগত বিপস্নবের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফেরত যেতে হবে। সেটা হলো- রাষ্ট্রের চার মূলনীতি :সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন, কিন্তু কেবল এটাই যথেষ্ট নয়। অনেক আগেই এটা করার দাবি করা সত্ত্বেও করা হয়নি। এটা নিয়ে ভোটের খেলা, খেলা হয়েছে। মূল কথা হলো- সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফেরত যেতে হবে।'
চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, 'এরশাদ সাহেবের সময় যেমন সবাই মিলে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল, এখনো আমরা সবাই মিলে একটা রূপরেখা তৈরি করব। তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা একটা জবাবদিহিমূলক সরকার পাব এবং গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, এরই মধ্যে সেটা বন্ধ হবে। যে নৈরাজ্য থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। এই সরকারেরও নেই। বিএনপিরও নেই। যারা ইদানীং ক্ষমতায় গেছে, ওইসব অপশক্তি খুশি করা ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। অতএব, আমি মনে করি, এটাই সমাধানের পথ। ক্ষমতা ছেড়ে সবার সমন্বয়ে একটা রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া।' সূত্র: জাগো নিউজ