কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্রলুট এবং বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়িত্বরত ৬৮ জন কারাক্ষীর সবাইকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বুধবার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জেলা কারাগারে মোট ৭৬ জন কারারক্ষী রয়েছেন। ঘটনার দিন আটজন ছুটিতে ছিলেন। যারা দায়িত্বে ছিলেন, সেই ৬৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই বিকালে হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালায়।
তারা কারাগারের বিভিন্ন অংশে অগ্নিসংযোগ করে এবং ভেতরে ঢুকে সেলের তালা ভেঙে দেয়। সেই সুযোগে কারাগারে থাকা ৯ জঙ্গিসহ মোট ৮২৬ জন কয়েদি পালিয়ে যায়। যেসব কয়েদি জেল ছেড়ে পালাতে চাননি, তাদের মারধরও করা হয়।
ওই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে কারাগার থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ ও খাদ্যপণ্য লুট করে হামলাকারীরা।
প্রাথমিকভাবে কারা কর্তৃপক্ষ ও রক্ষীরা প্রতিহত করার চেষ্টা করলেও অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হন। একপর্যায়ে তারা জীবন বাঁচাতে কয়েদিদের মধ্যে মিশে যান।
ঘটনার চারদিন পর ২৪ জুলাই খাদিজা পারভীন মেঘলা ও ইশরাত জাহান মৌ নামের দুই নারী জঙ্গি ধরা পড়েন।
তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও আনসারুলস্নাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান।
একইদিন জেল সুপার আবুল কালাম আজাদ এবং জেলার কামরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কারাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নরসিংদীতে মোট ১১টি মামলা হয়েছে।
নরসিংদীর আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৯ জঙ্গির মধ্যে পাঁচজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আর পলাতক ৮২৬ কয়েদির মধ্যে ৫৭৫ জন কারাগার ও আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
এছাড়া লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৯টি পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে বলে সোমবার নরসিংদীর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকার জানিয়েছিলেন।