কোটা সংস্কার আন্দোলনের বর্তমান পরিস্থিতিতে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুইপক্ষ। বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এ দুই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথমে সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সমর্থক চারজনের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে সমিতির সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক সরকার সমর্থক ১০ জনের উপস্থিতিতে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মোট কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪ জন সদস্যের মধ্যে গত নির্বাচনে ১০টি পদ পেয়েছিল সরকার সমর্থকরা। আর বাকি চারটি পায় বিএনপি সমর্থকরা।
সংবাদ সম্মেলনে শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, 'গত ৩০ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের দেশবিরোধী চক্রান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়।'
তিনি বলেন, 'কোটা আন্দোলনের সময় সাধারণ ছাত্রদের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির সারাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে। বর্তমানে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামায়াত দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি করে বাংলাদেশকে একটি মৌলবাদী ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে তৎপর।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে সরকার আন্তরিকভাবে দাঁড়িয়েছে এবং ছাত্রদের সব দাবি মেনে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যেন এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়, সে জন্য সরকার ও বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ।'
'সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় সম্পদ, আইনশৃঙ্খলা ও জনজীবন রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তাই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দেশবিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।'
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, 'মেট্রোরেল, সেতুভবন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপস্নাজা ও নরসিংদী কারাগারে কারা হামলা চালিয়েছে, তাদের এখনো কেন চিহ্নিত করা যায়নি? এসবের কোনো ভিডিও ফুটেজ সরকার প্রকাশ করছে না কেন?'
তিনি বলেন, 'বিচারপতি আবদুল মতিন ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের নেতৃত্বে গঠিত গণতদন্ত কমিশনকে আমরা সর্মথন জানাচ্ছি এবং এ কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য আইনজীবীসহ দেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'দ্রম্নত কারফিউ প্রত্যাহার ও সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবিসহ সববিশেষ বাহিনী প্রত্যাহার, ইন্টারনেট পুরোপুরি চালু করা, গণমাধ্যমের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। গ্রেপ্তার আইনজীবী ও বিএনপিসহ সববিরোধী দলের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি দাবি করছি। অবিলম্বে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি করছি। লাখো জীবনের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশে রক্তের হোলি খেলা বন্ধ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।'