স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে চলাচল শুরু করবে। কারফিউ শিথিল থাকার সময়টাতে মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। দুই-তিনদিন পর থেকে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
মঙ্গলবার রেলভবনে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে রেল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সবার মতামতের ভিত্তিতেই কারফিউ শিথিলের সময়ে স্বল্প দূরত্বের ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সূত্রটি জানায়, দুই থেকে তিনদিন পর আন্তঃনগর ট্রেনগুলো চালু হতে পারে।
এ বিষয়ে রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, শুরুতে শুধু মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলবে। এরপর আস্তে আস্তে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-গাজীপুর এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল পথের কমিউটার ট্রেনগুলো বেশি চলাচল করবে। কারফিউ শিথিল থাকা সময়ে তিন-চারবার যাতায়াত (ট্রিপ) করতে পারবে। দূরবর্তী যাত্রার মধ্যে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মধ্যে চলাচল করবে তিতাস কমিউটার ট্রেন। স্বাভাবিক সময়ে তিতাস ট্রেন দিনে চারবার আসা-যাওয়া করে। বৃহস্পতিবার একবার আসা-যাওয়া করতে পারে।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে স্বাভাবিক সময়ে ২০ বারের বেশি কমিউটার ট্রেন যাতায়াত করে। তবে শুরুতে চার-পাঁচবার আসা-যাওয়া করতে পারে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রেলের পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ) কয়েকটি পথে ট্রেন চলাচল করতে পারে। এর মধ্যে রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত চলাচল করবে কমিউটার ট্রেন। এ ছাড়া ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা আছে। এর বাইরে রাজশাহী থেকে রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের পথেও লোকাল ট্রেন চলতে পারে। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পথে ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে রেল কর্তৃপক্ষের।
বর্তমানে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার থেকে মালবাহী ট্রেনও কিছু চলতে পারে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাতের কারণে ১৮ জুলাই দুপুর থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার ভিত্তিতে রেল কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এভাবে রেল চলাচল বন্ধ রাখা নজিরবিহীন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিদিন ৪০০টির মতো যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেসও রয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয় ১০ দিন আগে থেকে। ট্রেনে প্রতিদিন যাত্রী চলাচল করে প্রায় আড়াই লাখ।