সহিংসতার তদন্ত চায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম
প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১:৪৫
যাযাদি ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় মৃতু্য এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ '৭১।
রোববার সংগঠনটির এক বিবৃতিতে এই আন্দোলনকে ভবিষ্যতের জন্য 'সতর্ক বার্তা' উলেস্নখ করে বলা হয়, শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের এই আন্দোলনকে 'স্বতঃস্ফূর্ত ও যুক্তিনির্ভর'।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম বলছে, 'কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার মনোবৃত্তির মানুষ যুক্ত হওয়ায় ছাত্র আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতার রূপ নেয়।'
এই সহিংসতায় প্রাণহানি এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির কথা তুলে ধরে সংগঠনটি বলেছে, 'সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ '৭১ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে প্রতিটি হত্যাকান্ড ও অবর্ণনীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষয়ক্ষতির যোগ্য বিচার দাবি করে। কারণ ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সম্পদ কোনো দল বা সরকারের নয়, সেগুলো রাষ্ট্রের বা বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ।'
দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা কোনো কোটা বা স্বার্থের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেননি বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়। সেখানে বলা হয়, 'ছাত্র আন্দোলনের নামে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।'
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রম্নত সুস্থ ও স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনারও দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা জুলাই মাসের শুরু থেকে ফেরে মাঠে। ধীরে ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে ৬ জনের মৃতু্যর খবর আসে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারাদেশে 'কমপিস্নট শাটডাউন' কর্মসূচি ঘোষণা হয়, সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। রাজধানীর বাড্ডা, উত্তরা ও ধানমন্ডি এলাকায় গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃতু্যর খবর আসে। গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলা শুরু হয়। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়ে।
রামপুরায় বিটিভি ভবন, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদু্যৎকেন্দ্রের সাব স্টেশন, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনেও ভাঙচুর হয়।
সেদিন থেকেই ঢাকার উত্তরার পথে পথে, ধানমন্ডির শংকর ও সোবহানবাগ এলাকা, মোহাম্মদপুর ও বসিলা, মিরপুর এলাকায় গোলাগুলির খবর আসে। এরপর কারফিউ জারি ও দুদফায় তিনদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এ কয়েক দিনের সংঘাতে ২ শতাধিক মানুষের মৃতু্যর কথা বলা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে আসা খবরে। তবে সরকারের তরফে নিহতের সংখ্যা ১৪৭ বলে জানানো হয়েছে।