১৯ জুলাই রাতে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল
'ড. ইউনূস আমাদের সঙ্গে নেই। আমরা তার সঙ্গে কেমন করে থাকব', 'মেট্রোরেল চালু না থাকায় ঢাকায় অসহনীয় যানজট'
প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১:৪২
যাযাদি ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'ওই রাতে শ্রীলংকান স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল।'
রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, 'বিএনপির নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান গণঅভু্যত্থান ঘটিয়ে শ্রীলংকান স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ওই রাতে ছিল। যদি কারফিউ জারি না হতো এমন পস্ন্যান তাদের ছিল। শ্রীলংকান স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা, অভু্যত্থানের ওপর রাইড করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করত। এটাই তো তাদের পরিকল্পনা।'
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী অপশক্তি নিয়ে নতুন পস্ন্যাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজও সেদিকে অনুসরণ করবে; এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে তাদের ঐক্য আগুন সন্ত্রাসের ঐক্য। দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।'
চলমান সহিংসতা নিয়ে বিদেশিদের বিবৃতি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'বিদেশ থেকে অনেকেই বিবৃতি দিচ্ছেন। অনেক সংস্থা, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও আছেন। কারা সমন্বয় করছেন আমরা জানি। তাদের বলব কারও প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটি'র ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসি'র ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে তা দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। বিবৃতিযুদ্ধ চলছে দেশে-বিদেশে। যেখানে ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলব ড. ইউনূসও যোগ দিয়েছেন।'
'ড. ইউনূস আমাদের সঙ্গে
নেই। আমরা তার সঙ্গে
কেমন করে থাকব'
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকায় যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সে বিষয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'আজকে ইউনূস কত নির্লজ্জ, তিনি ভারতকে অনুরোধ করেছেন শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নয়। তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন। বিবৃতি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপের জন্য বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান ড. ইউনূস। তিনি সাক্ষাৎকারে নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন।'
ড. ইউনূস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'অতীতে যিনি রাজনৈতিক দল খুলে ওয়ান-ইলেভেনে সাড়া পাননি, যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান। যিনি পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন। তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন। বাইরে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। আমাদের বিবেক আমাদের চালায়। কোনো বিদেশি শক্তি নয়।'
'প্রধানমন্ত্রীকে থামাতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানানো আপত্তিকর' উলেস্নখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এই দেশ স্বাধীন দেশ। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বুঝানো! কী বুঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন। খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কি?'
'ড. ইউনূস দেশের সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা লালন করেন না' বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। আমরা তার সঙ্গে কেমন করে থাকব। জাতির কোনো সংকট, সম্ভাবনায় তার ভূমিকা দেশের জনগণ দেখে না।'
মেট্রোরেল চালু না থাকায় যানজট :মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু না থাকায় রাজধানীতে ভয়াবহ যানজট হচ্ছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'আজ ঢাকা সিটিতে অসহনীয় যানজট। কেন এই যানজট? মেট্রোরেল নেই। যে ধ্বংসলীলা মেট্রোরেলের ১০ নম্বর স্টেশন, কাজীপাড়া স্টেশনে, আজ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপস্নাজা আগুনে কয়লা হয়ে গেছে। উত্তরা থেকে মানুষ আসা যাওয়া করতে পারছে না। সময়ও বাড়ছে, পরিবহণ ব্যয়ও বাড়ছে। এই কষ্ট বহুকালের। শেখ হাসিনাই জনগণের কষ্ট লাঘবে এসব প্রকল্প নিয়েছেন। আমাদের বাসর্ যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা। ৩৪টি এক্সিলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেমনে চালু করব? এগুলোতো মানুষের জন্য করেছেন।'
তিনি বলেন, জনগণ আজ উপলব্ধি করছেন মেট্রোরেল, এলিভেটেড বন্ধ থাকলে তারা কত কষ্টে থাকেন। এই কষ্ট আমরা দেইনি। এটা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।