রাবির ১৫৮ কক্ষে তান্ডব ৪ কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ভাঙচুরের দৃশ্য -ফাইল ছবি
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১০টি হলের ১৫৮ কক্ষে তান্ডব চালানো হয়েছে। এতে প্রায় চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। রাবির আবাসিক হলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। তিনি বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্যাহকে আহ্বায়ক করে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হোসেন বকুলকে। তদন্ত কমিটিকে ঘটনার বিবরণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং করণীয় (সুপারিশ) সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এজন্য কমিটিকে আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।' উপাচার্য বলেন, 'আবাসিক হলের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষরা। তাতে দেখা গেছে, ১০টি হলের ১৫৮টি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় চার কোটি টাকা।' উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার আরও বলেন, 'আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া হলগুলোকে বসবাসের উপযোগী করতে হবে। বেশকিছু হল এমন ক্ষতিগ্রস্ত যে কেউ দেখলে তার মনে আঘাত লাগবে। তাই আমরা চাই না যে শিক্ষার্থীরা এসে এসব দেখুক। আমরা এসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।' ক্যাম্পাসে সহিংসতার বর্ণনা দিতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, 'বিশ্ববিদ্যলয়ে যে সহিংসতা ঘটে গেছে এটা খুব দুঃখজনক। প্রথমে যে আন্দোলনটা হয়েছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল। কিন্তু গত ১৬ জুলাই একটা দুর্বৃত্তায়ন হয়ে গেল ক্যাম্পাসে। বাইরের লোক ঢুকে জ্বালাও-পোড়াও করে গেল। তার পরের দিন ১৭ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনে যারা ছিল তাদের সঙ্গে আমাদের তিনদফা বৈঠক হয়েছে। এতে তাদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া হয়। সন্ধ্যায় প্রশাসন ভবন থেকে আমাদের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। তারা যখন বাইরে বের হয়ে গেল তখন ছাত্ররা আমাদের খবর দিল আন্দোলন ছিনতাই হয়ে গেছে। মাইক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা ঢুকছে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারা ক্যাম্পাসে ঢুকছে। আমরা আর আন্দোলনে নাই। তখন আমরা বুঝতে পারলাম যে খারাপ দিকে যাচ্ছে বিষয়টা। এরপর শিক্ষার্থীরা চলে গেলে বহিরাগতরা এসে প্রশাসন ভবনে তালা মেরে দেয়। বিদু্যতের লাইন কেটে দেওয়া হয়। জেনারেটরে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে তারা। তখন প্রশাসন ভবনে আমার সঙ্গে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক ও প্রায় শতাধিক কর্মচারী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।' উপাচার্য বলেন, 'এবার সন্ত্রাসীরা যে আকারে ক্যাম্পাসে এসেছে তাদের যে চেহারা আমরা দেখেছি তা আগামীর জন্য খুব আশঙ্কাজনক। সবাইকে অনুরোধ করব শান্ত হতে। এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবতে হবে যে আমরা কিভাবে এগোতে চাই। কারণ, বিশ্ববিদ্যলয় মানেই এগিয়ে যাওয়া। আমরা একদিন যদি থেমে থাকি তাহলে কিন্তু অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি। আমরা থেমে থাকতে চাই না। আমাদের এখন যেতে হবে বহুদূর।'